বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে হওয়া হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় পুলিশের ২৮ সদস্য ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন। অন্যরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। তবে আসামি হওয়া পুলিশের নিচের স্তরের সদস্যদের দাবি, তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ পালন করেছেন মাত্র। গুলি না ছুড়েও মামলার আসামি হয়েছেন অনেকে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা এবং হত্যার ঘটনায় মামলাগুলো জনসাধারণ করেছে। যেসব মামলা হয়েছে সেগুলো পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে। যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, এটি চলমান প্রক্রিয়া।’
আন্দোলনে পুলিশের নিচের স্তরের সদস্যরা সিনিয়রদের নির্দেশে গুলি ছুড়েছেন, এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটির তদন্ত চলছে। তদন্তের মাঝখানে তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কোনো কিছু বলতে পারব না। পুলিশের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় আসামির তালিকায় আরও আছেন ৪৭ জন সাবেক আইজিপি ও সাবেক অতিরিক্ত আইজপি। ২৩ সাবেক ও বর্তমান ডিআইজি, ৪৫ সাবেক ও বর্তমান অতিরিক্ত ডিআইজি, ৬৩ পুলিশ সুপার, ৫৭ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ৩২ সহকারী পুলিশ সুপার ও ১৫৩ ইন্সপেক্টর।
সর্বোচ্চ ১৭১টি মামলার আসামি হয়েছেন সাবেক ডিবি প্রধান ডিআইজি হারুন অর রশিদ। মামলার সংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ১৫৫টি মামলা হয়েছে। এছাড়া সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১৭টি, অতিরিক্ত ডিআইজি বিপ্লব কুমার সরকারের বিরুদ্ধে ১২৫টি, সাবেক এসবি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৪৬টি মামলা হয়েছে।
ডিএমপির হাতিরঝিল থানার তৎকালীন এক উপপরিদর্শক (এসআই) বলেন, আসামি হওয়া ২৭৬ এসআইর মধ্যে ২০০ জনই নিরপরাধ। এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, গুলি খরচের ভিত্তিতে আসামি করা হচ্ছে। অথচ হাতিরঝিল থানার ডিউটির জন্য আমরা ফোর্স চাহিদা দেওয়ার প্রেক্ষিতে ৩০ জন ফোর্স পিওএম থেকে থানায় আসে। যেদিন রামপুরা টিভি ভবন আক্রমণ হয় সেদিন ওই ৩০ কনস্টেবল গুলি ছোড়েন।
রাত ৮টার পরে তারা দ্রুত চলে যান। তখন তাড়াহুড়া করে হিসাব না করে আমরা যে অফিসার ও কনস্টেবল ওই থানার স্থায়ী আছি তাদের মধ্যে খরচ হওয়া গুলি ভাগ করে খরচ দেখিয়ে দেয়। আমি গুলি করিনি এক রাউন্ডও কিন্তু আমার নামের পাশে ১৭ রাউন্ড লিখেছে। পরে পরিস্থিতি যে এমন হবে, পুলিশ আসামি হবে এটা কারও কল্পনায় ছিল না।