নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের বিষয়টি পাঠ্যবইয়ে এত বছর ধরে ‘মীমাংসিত সত্য’ হিসেবে উপস্থাপিত হয়ে আসছিল। বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি- সব দলের শাসনামলে এটি প্রায় একইভাবে বর্ণনা করা হয়েছিল। তবে এবার কয়েকটি বইয়ে সেই ইতিহাস বর্ণনার ধারায় ভিন্নচিত্র দেখা গেছে।
সপ্তম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা জানাতে ‘লাখো’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া মাধ্যমিকের ষষ্ঠ, নবম-দশম ও প্রাথমিকের তৃতীয় শ্রেণির বইয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। অথচ ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইয়ে এর আগের সংস্করণে একই জায়গায় ‘৩০ লাখ’ শহীদের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
পাঠ্যবইয়ের এমন বর্ণনায় সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তাতে ‘আগুনে ঘি ঢালার মতো’ অবস্থা হতে পারে বলে মনে করছেন ইতিহাস ও শিক্ষাবিদরা। যদিও বিষয়টি বড় কোনো ইস্যু নয় বলে দাবি করেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা।
সপ্তম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইতে ২০২২ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীরা এতদিন পড়েছে... ‘শেষ পর্যন্ত ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মাধ্যমে পাকিস্তানিদের ২৪ বছরের শোষণ আর বৈষম্যের অবসান ঘটায় বাঙালি। ফলে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।’
বর্তমানে ২০২৫ সালের ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে রয়েছে ‘বাংলাদেশ মুক্তিসংগ্রাম’। এ অধ্যায়ে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। শেষ দিকে উল্লেখ রয়েছে, ‘শেষ পর্যন্ত ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর জনযুদ্ধে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে পাকিস্তানিদের ২৪ বছরের শোষণ ও বৈষম্যের অবসান ঘটে। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।’
এছাড়াও ষষ্ঠ এবং নবম-দশম শ্রেণির একই বিষয়ের বইয়েও সুনির্দিষ্টভাবে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা উল্লেখ নেই।