শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ৫ মাঘ ১৪৩১
শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার প্রতিবাদ সমাবেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫, ১১:৫৯ AM
প্রাণপ্রিয় নবীজীর অবমামননাকারীদের ফাঁসি; শরীযতসম্মত পাঠ্যসূচী ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন; সন্ত্রাসী ইসকন নেতা এবং তাদের সহযোগীদের ‘ফাঁসি’; নেপালে সরকারীভাবে বৌদ্ধ মঠ নির্মাণের পরিকল্পনা বাতিল; আমদানী শুল্ক বৃদ্ধি ও ভ্যাট হ্রাসকরণ; দ্রব্যমূল্য-চিকিৎসামূল্য হ্রাসকরণ এবং শিল্প কারখানায় গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত বাতিল; পাঠ্যপুস্তক থেকে আদিবাসী শব্দ প্রত্যাহার এবং পার্বত্য অঞ্চলকেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক চক্রান্ত প্রতিহতকরণ এবং রাস্তার বেওয়ারিশ কুকুর নিধনের দাবীতে ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারী) বা’দ আছর রাজধানীর মালিবাগ মোড়ে ফাল ইয়াফরাহু চত্ত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন। 

উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশে ইনছাফ কায়েমকারী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার আহবায়ক আরিফ আল খবীর বলেন, “খালিক্ক মালিক্ব রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যমে সৃষ্টি জগতের কল্যাণে সম্মানিত পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে হাদিয়া করেছেন। কিন্তু শয়তানের অনুসারী ইসলামের চিরশত্রু ইহুদি-মুশরিক, কাফির, মুশরিক, মুনাফিকেরা নিজেদের অন্তরের হিংসাবশত সবসময় মুসলমানদের ঈমান, আমল, জান-মাল ক্ষতির অপচেষ্টায় লিপ্ত। তাদের খুদকুড়াভোগী কিছু মুসলমান পরিচয়ে লুকিয়ে থাকা মুনাফিকেরা ইসলামের বিরুদ্ধে এবং দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্তে লিপ্ত। তারা কখনও বক্তা, কখনও সংস্কৃতিবাদী ইত্যাদি বিভিন্ন সুরতে আমাদের প্রাণপ্রিয় রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানী করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। 

প্রথম দাবী : “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে অবমাননাকারীদের অবশ্যই অবশ্যই অবশ্যই ফাঁসি দিতে হবে।” 
  
দ্বিতীয় দাবী : পাঠ্যসূচী, পাঠ্যপুস্তক এবং শিক্ষানতি বিষয়ে। শতকরা ৯৮ ভাগ মুসলমানের এই দেশে অবশ্যই দ্বীনী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং শরীয়তসম্মত শিক্ষাসূচী ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করতে হবে। কোনো ভাবেই কোনো অনৈসলামিক শিক্ষা

দেয়া যাবেনা। দাখিল নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ ও নির্র্মিতি পুস্তকে শেষ প্রচ্ছদে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সাথে বাতিল ধর্মগুলোকেও সমান মর্যাদার ইংগিত করে ছবি অংকিত রয়েছে। নাউযুবিল্লাহ। নতুন পাঠ্যবইয়ে আবার চরিত্র নষ্ট করার জন্য কিভাবে গর্ভ নষ্ট করতে হয় এবং অবৈধ মেলামেশার শিক্ষাও রয়েছে। এই নিকৃষ্ট পাঠ্যসূচি এবং সকল পাঠ্যপুস্তকসমূহ বাদ দিতে হবে। এর পরিবর্তে নতুন করে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করতে হবে। চারুকলার নামে হারাম গান বাজনা শিক্ষা পরিহার করতে হবে। 
 
শিক্ষার জন্য দ্বীনী পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সহশিক্ষা, বেপর্দা, অবাধ মেলামেশা, ট্রান্সজেন্ডার, এলজিবিটিকিউ সংস্কৃতি পরিহার করতেই হবে। ছেলেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে সমূহে অবশ্যই মুসলমান পুরুষ শিক্ষক দিয়েই শিক্ষা দিতে হবে এবং মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ অবশ্যই মুসলমান দ্বীনদার মহিলাদের দ্বারাই পরিচালিত করতে হবে। পাঠ্যপুস্তক, শিক্ষানীতীতে যারা দেশবিরোধী এবং পবিত্র দ্বীন বিরোধী বিষয় প্রবেশ করিয়েছে তাদের সবাইকে গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে। দ্বীনদারীর শিক্ষা ছাড়া কখনও সুনাগরিক তৈরী সম্ভব নয়। 

তৃতীয় দাবি:  ইসকন, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, বিদ্যানন্দ সহ হিন্দুত্ববাদী সকল সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। রাষ্ট্রদ্রোহী অখণ্ড ভারতের প্রচারকারীদের গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে। ইসকন নেতা সন্ত্রসী চিন্ময় এবং তার সহযোগীসহ সকল উগ্রসন্ত্রসী হিন্দু নেতাদের ফাঁসি দিতে হবে। ‘বিদ্যানন্দ’কে কোনো প্রকার সাহায্য বা সহযোগীতা করা যাবেনা। দেশের এবং ইসলামের সন্মানার্থে সরকারী-বেসরকারী চাকুরী থেকে, নিরাপত্তা এবং আইন-শৃঙ্খরলাবাহিনী, প্রশাসন এবং দেশের নীতি নির্ধারক পদ থেকে হিন্দু, বৌদ্ধ, উপজাতিসহ সমস্ত বিধর্মীদের বহিষ্কার করতে হবে এবং নতুন করে কোনো বিধর্মীদের নিয়োগ দেয়া যাবেনা। অর্পিত সম্পত্তির কালো আইন এবং দেবোত্তর সম্পত্তির কালো আইন বাতিল করতে হবে। বিধর্মীদের কোনো ধর্মীয় দিবসের ছুটিকে বাধ্যতামূলক করা যাবেনা, ঐচ্ছিক করতে হবে। এর বিপরীতে অবশ্যই পবিত্র শবে মেরাজের ছুটিকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।  

দেশের মুসলমানদেরকে ধোকা দিয়ে ৬৮ কোটি টাকা ব্যায় করে নেপালের লুম্বিনীতে বৌদ্ধ মঠ কমপ্লেক্স বানানোর সরকারী পরিকল্পনা অবশ্যই বাদ দিতে হবে। শতকরা ৯৮ ভাগ মুসলমানের এই বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ, বহুসংস্কৃতির দেশ হিসাবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করার কুউদ্দেশ্য বাদ দিতে হবে। ভারতীয় এবং বিদেশী সব ধরণের আগ্রাসন প্রতিহত করতে হবে। ভারতীয় পণ্য এবং ভারতের ও বিদেশীদের থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করা বর্জন করতে হবে। ভারতের, আমেরিকার বা ভিন দেশের গোলামী আর তোষামোদী বাদ দিতে হবে। সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার জন্য ভারতের কাছে জবাব চাইতে হবে, ধিক্কার জানাতে হবে এবং এর বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। ভারতকে এর জন্য ক্ষমা চাইতে হবে নতুবা বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ উল্টো ভারত দখল করে ফেলবে। 

চতুর্থ দাবি : হক্কুল ইবাদ রক্ষার্থে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য এবং চিকিৎসা সেবার মূল্য কমিয়ে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে। *দেশের অর্থনীতি আমদানি নির্ভর না করে উৎপাদনমুখী করতে হবে। শুল্ক, কর, ভ্যাট ইত্যাদি কমিয়ে দিয়ে; রাষ্ট্রের তরফ থেকে বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে দেশীয় শিল্পকে উৎপাদনে উৎসাহিত করতে হবে। * ইহুদিবাদী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে ৬৫ পণ্য ও সেবার ভ্যাট-সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। দেশের স্বার্থে আমদানী পণ্যের উপরে শুল্ক বৃদ্ধি করে দেশীয় উৎপাদিত পণ্যের উপর ভ্যাট কমাতে হবে। জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, এলপি গ্যাস, খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের উপর ভ্যাট হার বৃদ্ধি দ্রব্যমূল্য বাড়াবে। তাই দেশীয় উৎপাদিত পণ্যের উপর ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেশকে অর্থীনতিকভাবে পঙ্গু করার একটি বড় ষড়যন্ত্র। 

৫ম দাবি: শিল্প ও ক্যাপটিভে গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করার মহাজুলুমবাজী সিদ্ধান্ত আজই প্রত্যাহার করতে হবে। শিল্প ও ক্যাপটিভ শ্রেণিতে নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের গ্যাসের দাম হবে এলএনজির আমদানি ব্যয়ের সমান-এহেন সিদ্ধান্ত দেশের শিল্পকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত, ঝুলুমের সিদ্ধান্ত, চুরির সিদ্ধান্ত। এই দেশের খনিতে উৎপাদিত গ্যাস এলএনজির দামে কিনতে হবে কেনো?! ষড়যন্ত্রমূলক আত্মঘাতী এই সব সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে এবং অর্থ উপদেষ্টা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।  

৬ষ্ঠ দাবি: উপজাতিদেরকে আদিবাসী না বলার বিষয়ে। এই বছরের দাখিল নবম-দশম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকের প্রচ্ছদে উপজাতিদের ‘আদিবাসি’ বলে উল্লেখ করা হয় এটা একটা চক্রান্ত। তাদেরকে আদিবাসি বললে তারা তাদের জন্য স্বায়ত্তশাসন চাইতে পারবে, দেশের মধ্যে পৃথক ভূখন্ড দাবী করতে পারবে, আলাদা জাতীয়তার দাবী করতে পারবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং উপজাতিদের নিয়ে বিদেশী সকল চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজা প্রথা বাতিল করে সারা দেশের মতই একই আইন চলতে হবে। উপজাতিদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বলতে হবে, আদিবাসি বলা যাবেনা। যারা উপজাতিদের আদিবাসী বলে প্রচার করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। 

৭ম দাবি: মানুষের কল্যাণে এবং জননিরাপত্তার প্রয়োজনে জন্য অবিলম্বে রাস্তার বেওয়ারিশ কুকুর নিধন করতে হবে। পুলিশ, সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভাকে এই কাজে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি কুকুর পূজারীদেরকে গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিবাদ সমাবেশে ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার শতাধিক কর্মী উপস্থিত ছিলেন। 

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সোস্যাল নেটওয়ার্ক

  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত