নাঙ্গলকোটে যুবদল নেতার নেতৃত্বে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ১০-১২ মিলে গণধর্ষণ করা হয়েছে। এ সময় জোরপূর্বক ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললে এ ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নাঙ্গলকোটে উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের সেবাখোলা নামক স্থানের একটি স মিলে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল দুপুরে ভুক্তভোগী দুই নারী বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। রাতে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগীরা কুমিল্লা নগরীর টমছম ব্রিজ এলাকায় বসবাস এবং বিভিন্ন বাসাবাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করেন।
ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন যুবদল নেতা মো. মহসিন, তিনি বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের রঞ্জু মিয়ার ছেলে; অন্যজন স মিলের মালিক খোকন মিয়া। বাকিদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।
ভুক্তভোগীরা জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আমাদের দুজনকে রাস্তা থেকে তুলে স মিলের একটি কক্ষে নেওয়া হয়। সেখানে আমাদের জিম্মি করে মহসিন এবং খোকনসহ ১০-১২ মিলে গণধর্ষণ করে। আমরা মহসিন এবং খোকনকে চিনতে পেরেছি। বাকিদের দেখলে চিনতে পারব।
তারা বলেন, ধর্ষণের সময় আমাদের মারধর করে জোরপূর্বক ভিডিও ধারণ করা হয়। এ সময় চিৎকার দিলে আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত আমাদের সাথে এসব চলে। স মিলের মালিক সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। পরে আমাদের তারা রাতেও রাখতে চায়; কিন্তু আমরা হাতে পায়ে ধরে তাদের থেকে ছাড়া পাইছি। পরে আমাদের অটোরিকশায় তুলে দিয়ে চৌদ্দগ্রাম বাজারে নামিয়ে দিতে বলা হয়। আমাদের সঙ্গে এই অন্যায়ের বিচার চাই আমরা। এদিকে ঘটনার পর অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
মুঠোফোন অভিযুক্ত স মিলের মালিক খোকন মিয়া বলেন, জোরপূর্বক আমার স'মিলে দুই মেয়ে নিয়ে ঢুকে যুবদল নেতা মহসিন। এ সময় তার সঙ্গে আরও ১০-১২ জন ছিল। আমি কিছু করিনি, তারাই সব করছে।
অভিযুক্ত মহসিনের পিতা রঞ্জু মিয়া বলেন, আমার ছেলের বিরুদ্ধে আনিত ধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যা। ষড়যন্ত্র করে একটি চক্র তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
নাঙ্গলকোট উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি এ ঘটনা সম্পর্কে অবগত নই। এ ধরনের ঘটনায় জড়িত থাকলে মহসিনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে আমরা পুলিশকে অনুরোধ করব। এসব অপকর্ম করলে আমরা তার দায়ভার নেব না।
নাঙ্গলকোট থানার ওসি একে ফজলুল হক বলেন, ভিকটিম দুই নারী থানায় এসে গণধর্ষণের অভিযোগ করেছে। তারা মহসিন এবং খোকন নামের দুজনের নাম বলতে পেরেছেন। বাকিদের দেখলে চিনতে পারবে বলছেন। আমরা তাদের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করছি। অভিযুক্তরা ধরা পড়লে ঘটনার ক্লু বেরিয়ে আসবে।