খুলনার পাইকগাছা কয়রার (খুলনা-৬) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবুসহ কয়রা ইউনিয়ন পরিষদের দুই চেয়ারম্যান ও তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১০৮ জনের নামে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) আদালতে আদালতে এ দায়ের করা হয়।
মিথ্যা মামলায় হয়রাণি, ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি ও লুটপাটের অভিযোগে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, কয়রায় এ মামলা দায়ের করেন মোঃ নূরুল ইসলাম। তিনি একজন শিক্ষক ও বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর কর্মী। নূরুল ইসলাম কয়রা উপজেলার সরিষামুট গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলো, উপজেলার কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহারুল ইসলাম, বাগালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সামাদ গাজী, একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস সাত্তার পাড়, উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সালাউদ্দিন, এএসআই আশরাফুজ্জামান ও নাসির উদ্দিনসহ আট পুলিশ সদস্য, একাধিক আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মী, আইনজীবি এবং জনপ্রতিনিধি রয়েছে।
মামলা সূত্রে, আসামীগণ বিভিন্ন সময়ে বাদীর নিকট চাঁদা দাবি করিত এবং হুমকি দিতো। মামলায় জড়িত থাকা পুলিশ সদস্যরা নাশকতার মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় জড়ানোসহ ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে চাঁদা গ্রহণ করতো বলে জানা যায়।
একপর্যায়ে একটি মামলায় খুলনা জেলা আদালতে মামলার হাজিরার জন্য যাওয়ার পথে আসামীগণসহ অজ্ঞাতনামা ১০০/১২০ জন সন্ত্রাসীরা পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে চা-পাতি, দা, লাঠি, শাবল, লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠনের ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ ও মূল দলসহ তাদেরকে মসজিদকুড় ব্রিজ এর দুই পার্শ্ব আটকে রেখে সাথে থাকা খাদ্য সামগ্রী, নগদ টাকা, ঘড়ি, স্বর্ণের আংটি, চেইন লুটপাট করে নেয়। যার আনুমানিক মূল্য ১০ লাখ টাকা।
এছাড়া পনের লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে হুমকি দেয়। এসময় ২টি বিস্ফোরক দ্রব্য ব্রীজের দুই পার্শ্বে ফাটিয়ে আতংক সৃষ্টি করে আমাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে। পরবর্তীতে আসামীদের চাঁদার টাকা না দেওয়ায় বাদীর বসত ঘরে প্রবেশ করে বাদীর স্ত্রী ও পরিবারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জীবনে শেষ করে দেওয়ার ভয় দেখায় এবং বাদীর বসত ঘরের ট্রাঙ্ক ভেঙে নগদ অর্থ লুটপাট করে।
মামলার বাদী মোঃ নূরুল ইসলাম বলেন, বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের আমলে আমাদেরকে নানাভাবে হয়রাণি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের নির্দেশে পুলিশ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রাণি করেছে। বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধামকি দিয়ে চাঁদা আদায়সহ ঘরবাড়ি লুটপাট করেছে। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে ন্যায় বিচারের আশায় আদালতের শরনাপন্ন হয়েছি। আশা করছি ন্যায় বিচার পাবো।
বাদীর আইনজীবি এড. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, মামলাটি আদালত আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে। আশা করি ন্যায় বিচার পাবো।