শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ৫ মাঘ ১৪৩১
শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
ছাত্রজনতার আন্দোলনে কেবল একদিনেই নিহত হয় ১৪৮ জন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ২:৪৮ PM
ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই এক দিনেই ১৪৮ জন নিহত হন বলে ‘ব্লাডশেড ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে আইটিজেপি ও টিজিআই।

ইন্টারন্যাশনাল ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস প্রজেক্ট (আইটিজেপি) এবং টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট (টিজিআই) এর তৈরি করা এই প্রতিবেদন বলছে, সেদিন নিহত ১৪৮ জনের মধ্যে ৫৪ জনকে মাথায় বা গলায় গুলি করা হয়েছিল। অধিকাংশের বয়স ছিল ৪০ বছরের মধ্যে। ঢাকায় হতাহতের মাত্রা এত বেশি ছিল যে একটি হাসপাতালে আক্ষরিক অর্থেই গজ ও ব্যান্ডেজ ফুরিয়ে যায়।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, শেখ হাসিনা সরকার পতনের কয়েকদিন পর তারা প্রমাণ সংগ্রহ করতে মাঠে নামে এবং পরিবারগুলো ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার নেয়। এই প্রতিবেদনের পাশাপাশি দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রকাশ করা হয়। সামাজিক মাধ্যমে পাওয়া পুলিশি নির্যাতনের ভিডিওগুলো প্রমাণ হিসেবে একত্রিত করে কী ঘটেছিল তা বোঝানোর চেষ্টা করে হয়েছে এসব প্রামাণ্যচিত্রে।

একটিতে দেখা যায়, যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ বিপুল সংখ্যক তরুণ আন্দোলনকারীদের ঠান্ডা মাথায় হত্যা করছে। আর অন্যটিতে ৫ আগস্ট গাজীপুরে মোহাম্মাদ হৃদয় নামে এক তরুণকে ধরে নিয়ে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে হত্যার ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে।
নিহতদের পরিবারগুলোকে কতটা যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, পুলিশের গুলিতে আহত সন্তানদের খুঁজতে কীভাবে হাসপাতালের মর্গে ঘুরে বেড়াতে হয়েছ, সেসব চিত্রও উঠে এসেছে ৬০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে।

প্রবল মানসিক আঘাতের মধ্যেও শোকাহত পরিবারগুলোকে ‘ক্ষমতাসীনদের বৈরিতা’ মোকাবিলা করতে হয়েছে। প্রিয়জনের মৃতদেহ দাফনের জন্য মৃত্যু সনদ ও পোস্টমর্টেম রিপোর্ট সংগ্রহ করতেও নানা ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। ভয় এবং আতঙ্কে আচ্ছন্ন ছিল দাফনের আয়োজন, যেখানে কিছু পরিবার বাধা এড়াতে ভোরের আলো ফোটার আগেই গোপনে দাফন সম্পন্ন করেছে, যাতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় কর্মীদের কোনো বাধার মুখে পড়তে না হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, শহীদ হৃদয়ের বোন জেসমিন ও শহীদ মুনতাসীর রহমান আলিফের বাবা গাজীউর রহমান, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান, আইটিজেপির নির্বাহী পরিচালক ইয়াসমিন সুকা, টেক গ্লোবাল ইনস্টিউটের নির্বাহী পরিচালক শাবহানাজ রশিদ দিয়া।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, যখনই অত্যাচারে মৃত্যুর দৃশ্য দেখি, মনে হয় বিচার নিশ্চিত করতে না পারলে আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার নাই। আমাদের প্রসিকিউশন টিম তদন্ত টিম কাজ করছে, আমি কথা দিচ্ছি, এটার সুবিচার নিশ্চিত করবই। এ সরকারের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব জুলাই অভ্যুত্থানে সুবিচার নিশ্চিত করা। ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচারের চেয়ে আমাদের বিচার যে ভিন্ন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সোস্যাল নেটওয়ার্ক

  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত