কাপাসিয়ায় চাঁদপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদ হোসেনের ওপর হামলার ঘটনা মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করার অপরাধে মালয়েশিয়াফেরত এনামুল হককে (৩৫) পিটিয়ে আহত করার তিন দিন পর তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার কাপাসিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
নিহত এনামুল হক দীর্ঘ ১৭ বছর যাবৎ মালয়েশিয়াপ্রবাসী ছিলেন। ঘটনার তিন মাস আগে তিনি মালয়েশিয়া থেকে একেবারে দেশে চলে আসেন। তার ঘরে স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার এবং রিয়াদ হোসেন নামে তিন বছরের এক ছেলেসন্তান রয়েছে। ছোট থাকা অবস্থায় তার বাবা-মা মারা যাওয়ার পর তিনি তার বোনের কাছে বড় হন। এনামুলের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ভাকোয়াদী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নির্বাচন কমিশনের পূর্বনির্ধারিত স্মার্টকার্ড বিতরণ চলছিল। চাঁদপুর ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদ হোসেন তার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) স্মার্টকার্ড সংগ্রহ করতে যাচ্ছিলেন। ওই বিদ্যালয়ের কাছে পৌঁছালে চাঁদপুর ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান মোড়লের ছেলে চাঁদপুর ইউনিয়নের ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তারেক মোড়ল ও তার সহযোগী ইউনিয়ন ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের ২০-৩০ জন নেতাকর্মী তার ওপর হামলা করে গুরুতর আহত করে।
এ সময় দৌড়ে ভাকোয়াদী কমিউনিটি ক্লিনিকের কাছে যাওয়ার সময় নিহত এনামুল হক ধলিসূতা তার বোনের বাড়ি থেকে ফিরছিলেন। ফরিদ হোসেনকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে তাঁর মোবাইল ফোনে ভিডিও করছিলেন এনামুল। হামলার ঘটনা ভিডিও ধারণ করলে ফরিদ হোসেনের লোক মনে করে হামলাকারীরা তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে মারপিট করে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে এনামুলের স্বজনরা তাকে বাড়িতে নিয়ে চিকিৎসা দেয়।
নিহতের ভগ্নিপতি মানছুর আহমেদ বলেন, সকালে এনামুল শরীর খারাপ লাগার কথা জানিয়ে তাকে গাজীপুর গিয়ে চিকিৎসা দিতে বলে। এরপর এনামুল ওই দিন সকালে গাজীপুর শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদ রোডে রেডিয়াম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসক দেখিয়ে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বাড়িতে ফিরে যায়। ওই দিন সন্ধ্যার পর এনামুলের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার ফোন করে জানায়, এনামুল অসুস্থ হয়ে বারবার খিঁচুনি দিচ্ছে। পরে স্বজনরা তাকে দ্রত গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টা ১০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
চাঁদপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মেজবাহ উদ্দিন বলেন, শুনেছি ভিডিও ধারণ করার অপরাধে ছাত্রদলের লোকজন এনামুলকে মারধর করেছিল। তিন দিন পর গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।