আলোচিত নারী উদ্যোক্তা ও ইনফ্লুয়েন্সার রোবাইয়াত ফাতিমা তনির স্বামী শাহাদাৎ হোসাইন মারা গেছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নেটিজেনদের মধ্যে চলছিল নানা আলোচনা। এবার নেটিজেনদের উদ্দেশে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দিয়েছেন তনি।
রোবাইয়াত ফাতিমা তনি ওই পোস্টের সঙ্গে স্বামীর হাসপাতালের ছবি জুড়ে দিয়ে লেখেন, মিশন সাকসেসফুল- এই ছবিটা পোস্ট করে যারা এইসব লিখেছেন। আমি জানতে চাই মিশন সাকসেসফুল কি! একটা প্রমাণ দেখাতে পারলে ফেসবুকে আর চেহারা দেখাব না।
তিনি আরো লেখেন, যারা আমার নেক্সট বিয়ে নিয়ে চিন্তা করে মরে যাচ্ছেন তাদেরকে বলতে চাই, আমাকে নিয়ে যত ভাবেন যদি নিজেকে নিয়ে যদি এর ৫০% ও ভাবতেন তাহলে আমাকে নিয়ে ভাবার সময় পেতেন না। আমি অনেক ভাগ্যবতী এমন একজন মানুষকে আমার হাসব্যান্ড হিসেবে পেয়েছি যার ভালোবাসা আমাকে সারাজীবন বাঁচিয়ে রাখবে ইনশাল্লাহ। আমার জীবন চলার জন্য আল্লাহর রহমত আর সাহায্য ছাড়া অন্য কারো প্রয়োজন নেই, আমি যথেষ্ট কেপাবল আলহামদুলিল্লাহ। ছেলে-মেয়ে দুইটাকে আমার হাসব্যান্ডের আদর্শে বড় করতে চাই, আমি বিশ্বাস করি আমার হাসব্যান্ড পরপারে আমার জন্য অপেক্ষা করবে। তাই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সাদাদ রহমানের ওয়াইফ এই পরিচয়টা প্রাউডলি বহন করতে চাই। নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা উত্তম পরিকল্পনাকারী। নিজের ওপর অগাধ বিশ্বাস আর অনেক কন্ট্রোল আছে আমার, তাই আমাকে নিয়ে বেকার চিন্তা করা থামান।
হিংসুটে লোকদের কাজ হচ্ছে অন্যের পেছনে পরে থাকা উল্লেখ করে এই উদ্যোক্তা লেখেন, আমার হাসব্যান্ড ১০১ দিন লাইফ সাপোর্টে ছিল। প্রথমদিকে আমি বেশিরভাগ সময় ব্যাংককে থাকতাম, কিন্তু হাসপাতালে প্রতিদিন ১০-১২ লক্ষ টাকা বিল দিতে গিয়ে আমার অর্থনৈতিক অবস্থান কি হতে পারে এটা যেকোনো শিক্ষিত মানুষকে মনে হয় না বোঝাতে হবে।
এর পর হসপিটালে আমার হাসব্যান্ডের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা থাকার জন্য স্পেশাল আইসিইউ নার্স আলাদা করে অ্যাপোয়েন্ট করে প্রতি সপ্তাহে বাংলাদেশ-ব্যাংকক আসা যাওয়া শুরু করি, কারণ আমাকে সবকিছু ঠিক রাখতে হবে। এ ছাড়া এত বড় অংকের বিল মেটানো সম্ভব নয়। এর মধ্যে ফেসবুকে মানুষের নানা রকম উপদেশ, ভুয়া নিউজ, ট্রল এইসব কিছু তো আছেই—অনেকে আমাকে ডিরেক্টলি পর্যন্ত বলছে লাইফ সাপোর্ট খুলে দেন! কত বড় অসভ্য হলে এই সব তারা করতে/বলতে পারছে!
আলোচিত এই নারী উদ্যোক্তা আরো লেখেন, আপনাদের কোনো ধারণা আছে ব্যাংককে ট্রিটমেন্ট করতে কত টাকা খরচ হয়! আর মেন্টালি ফিজিক্যালি কতটা স্ট্রাগল করতে হয়েছে আমাকে! আজকে ঢাকা তো কালকে ব্যাংকক, যেটা অনেকের কাছে স্বপ্নের মতো, হাসব্যান্ড, হাসপাতেলের বিল, বাচ্চা, পরিবার, বিজনেস—সব টেনশন আমাকে একা নিতে হয়েছে, আপনাদেরকে নয়। নিজেকে প্রশ্ন করে দেখেন তো আপনার হাসব্যান্ড বা ওয়াইফ কোমাতে চলে গেলে কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে শুধুমাত্র আল্লাহর ওপর বিশ্বাস করে কোনো মিরাক্কেলের আশায় আমার মতো এমন স্টেপ নিতে পারবেন তো!