দিনাজপুরে নিজ বাড়ির উঠানে বসে থাকা এক কিশোরী ফায়ারিং স্কোয়ার্ড থেকে পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ কিশোরীর নাম শাহনাজ পারভিন (১৫)। তিনি দিনাজপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্রী।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দিনাজপুর সদর উপজেলায় আনসার ও ভিডিপি কার্যালয় থেকে দেড় কিলোমিটার দুরে পশ্চিম শিবরামপুর কোম্পানি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত শাহনাজ পারভীন শিবরামপুর এলাকার জালাল উদ্দিনের মেয়ে। ওই কিশোরী দিনাজপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। বর্তমানে তিনি নিজ বাড়িতেই আছেন।
জানা যায়, দিনাজপুর জেলা পুলিশের আয়োজনে বার্ষিক ফায়ারিং প্র্যাকটিস করার জন্য দিনাজপুর আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ডেন্ট এর কার্যালয়ের অভ্যন্তরে আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে পুলিশ বার্ষিক ফায়ারিং প্র্যাকটিস শুরু করে। হঠাৎ করেই একটি গুলি উপরে উঠে গিয়ে এক কিলোমিটার দূরে গিয়ে নিজ বাড়ির আঙিনাতে চেয়ারে বসে থাকা অবস্থায় শাহনাজ পারভীনের ডান পায়ের হাঁটু উপরে গুলি লেগে যায়। পায়ে গুলিবিদ্ধ হওয়ার সাথে সাথেই শাহনাজ চিৎকার করে চেয়ার থেকে মাটিতে পড়ে যায়। পরিবারের অন্য সদস্যরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে দেখে তার হাঁটু থেকে রক্ত পরছে। হাঁটুর কাপড় সরাতেই গুলিটি মাটিতে পড়ে যায়। গুলি সহ আহত শাহনাজকে প্রথমে আনসার ভিডিপি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে দিনাজপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করানো হয়।
দিনাজপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার রাকিব হাসান বলেন, শাহনাজ এর হাঁটুর উপরে প্রায় এক ইঞ্চি পরিমাণ ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। তাকে চিকিৎসা দিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ব্যান্ডেজের কাজ সম্পন্ন করার পর তাকে তার নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আহত শাহনাজ পারভিন এর বাবা জালাল উদ্দিন বলেন, আমার মেয়ে বাড়িতেই বসেছিল পুলিশের গুলি এসে আমার মেয়ের পায়ে লেগেছে। এটা যদি পায়ে না লেগে শরীরের অন্য কোনো স্থানে লাগত তাহলে তো আজকে হয়তবা অন্য কিছু হয়ে যেতে পারত। পুলিশের এমন খামখেয়ালিপনা এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। গুলিটি যদি আমার মেয়ের বুকে বা মাথায় লাগতো তাহলে তো সে মারা যেত।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে যখন আমি পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কাছে গিয়েছিলাম তখন তারা বিষয়টি উপেক্ষা করে আমাকে তাচ্ছিল্য করেছে। মাত্র এক হাজার টাকা আমাকে হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেছে চিকিৎসা করাতে। এটি কেমন ধরনের ব্যবহার। আমি তো টাকার জন্য তাদেরকে তাদের কাছে নিয়ে যাইনি। তারা ভালো করে আমার সঙ্গে কথা বলতে পারতো কিন্তু সেটা না করে আমার সঙ্গে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছে। আমরা তাদের কাছ থেকে এমন আচরণ কামনা করি না।