কুষ্টিয়া শহরে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে চিত্র সাংবাদিক ইমরান হোসেনের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও বেধড়ক মারপিট করা হয়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানা একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত চিহ্নিত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। প্রতিবাদ এবং হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।
আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের গেটের সামনে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে কুষ্টিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। তারা দোষীদের আইনের আওতায় আনতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। অন্যথায় কঠিন কর্মসূচি দেওয়ার কথা জানান তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রোববার সকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক ইমরানের ওপর সন্ত্রাসী হামলা করেছে সন্ত্রাসীরা। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। হামলার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যেন আগামীতে কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায়। দেশে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিভিন্ন সময় এই ধরনের হামলার বিচার না হওয়ায় ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। দোষীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, রোববার সকাল সাড়ে ৯টার সময় কুষ্টিয়া শহরের ফুলতলা এলাকায় প্রতীতি বিদ্যালয়ের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল ছাত্র ইব্রাহিম (৬) নিহত হয়। এতে তার দাদি আহত হন। এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে যান চিত্র সাংবাদিক ইমরান হোসেন। “দৈনিক খবরওয়ালা” পত্রিকার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে লাইভ চলাকালে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদকসেবী রকি (৩২) এবং আরিফুল (৩৩) সহ আরও ১০/১২ জন তাকে হত্যার উদ্দেশে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে এবং নাক, পিঠ ও মাথা কেটে রক্তাক্ত জখমের করে। যার একটি ভিডিও ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ছাড়া ইমরান হোসেনের সঙ্গে থাকা অফিসের প্যানাসনিক পিভি-১০০ মডেলের ভিডিও ক্যামেরা এবং ক্যামেরার বয়া (মাইক্রোফোন) ছিনিয়ে নেয়।
দৈনিক খবরওয়ালা পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুন্সী শাহীন আহমেদ বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের সামনে ইমরানের ওপরে হামলা করা হয় এবং তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনার পর কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। হামলার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে কারা হামলা করেছে। তবে কোন এক অদৃশ্য কারণে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার না করা হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দেবো।
কুষ্টিয়ার পুলিশ পুলিশ (এসপি) মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। হামলায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।