দক্ষিণ বনশ্রীতে অবস্থিত ‘আজাক ভবন’ নামে একটি ভবনের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে- সদ্য পদত্যাগ করা তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের বাবা ১০ কোটি টাকা দিয়ে ভবনটি কিনে নিয়েছেন।
সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভবনটির মালিক আনোয়ার হোসেন, নাহিদ ইসলামের বাবা বদরুল ইসলাম নন। ভবনটির মালিক আনোয়ার হোসেন নিশ্চিত করেন ‘আজাক ভবন’ বিক্রির তথ্যটি সম্পূর্ণ গুজব। কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।
ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলো বিশ্লেষণ করে এ দাবি সম্পর্কিত সম্ভাব্য প্রথম পাবলিক পোস্টটি পাওয়া যায় আব্দুল্লাহ রনি (Abdullah Rony) নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে।
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ৩৮ মিনিটে অ্যাকাউন্টটিতে ‘আজাক ভবন’- এর নামফলকসহ ভবনটির মোট তিনটি ছবি পোস্ট করা হয়। নামফলকে বাড়ির মালিকের নাম দেওয়া আনোয়ার হোসেন, (পিতা মৃত আবুল হাশেম হাওলাদার)।
এতে দাবি করা হয়, খিলগাঁও,দক্ষিন বনশ্রী, ব্লক—ই তে উপদেষ্টা নাহিদের স্কুল শিক্ষক বাবা বাড়িটি ক্রয় করেছে দশ কোটি টাকায়। দাবির সমর্থনে পোস্টটিতে কোনো তথ্যসূত্র পাওয়া যায়নি।
একইসময়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া অন্যান্য পোস্টেও দাবিটির সমর্থনে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্যসূত্র পাওয়া যায়নি। বরং কিছু কিছু ফেসবুক পোস্টে নামফলকে থাকা আনোয়ার হোসেনকে সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের বাবা দাবি করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, নাহিদ ইসলামের বাবার নাম বদরুল ইসলাম জামির।
দাবিটির পক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র না পাওয়া এবং নাহিদ ইসলামের বাবার নামের অসঙ্গতির কারণে দাবিটির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে দক্ষিণ বনশ্রীর ই ব্লকে অবস্থিত আজাক ভবনে সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে সেখানে কথা হয় ই ব্লকের ৫ নম্বর সড়কে অবস্থিত ৬৮ নম্বর বাড়িটির মালিক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে।
আজাক ভবনটি নাহিদ ইসলামের বাবার কিনে নেওয়ার দাবির প্রসঙ্গে তিনি জানান, এটি সম্পূর্ণ গুজব, ভুয়া। তার বাড়ি বিক্রি করার কোনো প্রশ্নই আসে না। এভাবে গুজব ছড়িয়ে তার সম্মানহানি করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘‘নাহিদের বাবার নাম বদরুল ইসলাম জামির আর আমার নাম আনোয়ার হোসেন।”
সুতরাং, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দাবিটির পক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র না পাওয়া, নাহিদ ইসলামের বাবার নামের সঙ্গে বাড়ির মালিকের নামের অসঙ্গতি ও বাড়ির মালিকের সরেজমিন সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এটি প্রতীয়মান হয় যে, রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রীতে অবস্থিত আজাক ভবনটি নাহিদ ইসলামের বাবার কিনে নেয়ার দাবিটি ভিত্তিহীন।