শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ৬ বৈশাখ ১৪৩২
শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫
মার্কিন সহায়তা কর্তন
এইচআইভিতে আক্রান্ত ৫ লাখ মানুষ মারা যেতে শুধু দ. আফ্রিকাতেই
প্রকাশ: শনিবার, ১ মার্চ, ২০২৫, ৬:০৬ PM
অনেক আফ্রিকান দেশে এইচআইভি/এইডস কর্মসূচিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল হ্রাসের ফলে মহাদেশে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং সাহায্য সংস্থাগুলো সতর্ক করে এই কথা জানিয়েছে।

ডেসমন্ড টুটু এইচআইভি সেন্টারের একজন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বলেছেন, শুধুমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকাতেই মার্কিন তহবিল বন্ধের ফলে আগামী ১০ বছরে পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। বৃহস্পতিবার ডেসমন্ড টুটু এইচআইভি সেন্টারের প্রধান অপারেটিং কর্মকর্তা লিন্ড-গেইল বেক্কার বলেছেন, এই অর্থায়ন বন্ধ করার ফল দক্ষিণ আফ্রিকায় হবে বিপর্যয়কর।

মার্কিন সাহায্যের ব্যাপক হ্রাসের প্রভাব দেশগুলোতে পড়তে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি ব্যাপক নির্বাহী আদেশ জারি করেন। য়ার ফলে প্রাথমিকভাবে ৯০ দিনের জন্য বিদেশি সাহায্য সহায়তা স্থগিত করে। এই সপ্তাহে ট্রাম্প সরকার মার্কিন সাহায্য সংস্থা (ইউএসআইডি)-এর অর্থায়িত বিদেশি চুক্তির ৯০ শতাংশ হ্রাস করেছে এবং ওয়াশিংটনে সংস্থাটির হাজার হাজার কর্মীকে বরখাস্ত করেছে।
লিন্ড-গেইল বেক্কার ওই মন্তব্য করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের পরিণতি হবে করুণ। তিনি আরো বলেন, আমাদের তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে হবে মানুষ মারা যাচ্ছে। অর্থের অভাবে অপ্রয়োজনে ৫ লাখ মানুষ মারা যাবেন। আর ৫ লাখ মানুষ নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার খবর আসে, ট্রাম্প প্রশাসন জাতিসংঘের এইচআইভি/এইডস প্রোগ্রাম ইউএআইডিএস-এর তহবিল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা বিশ্বজুড়ে মানুষকে সহায়তা করে।

এই সপ্তাহে একটি প্রতিবেদনে ইউএআইডিএস জানিয়েছে, বিশ্বের কমপক্ষে ৫৫টি দেশ এইচআইভি প্রোগ্রামগুলোতে তহবিল হ্রাসের কথা জানিয়েছে। এর  মধ্যে বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশও রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এইডস ত্রাণ পরিকল্পনা (পিইপিএফএআর) সমর্থিত ৫৫টি এইচআইভি প্রকল্প এরই মধ্যে বন্ধ করা হয়েছে অথবা আংশিকভাবে মার্কিন তহবিল পেয়েছে।

জাতিসংঘ বলেছে, আফ্রিকার বহু দেশে তাদের এইচআইভি বিষয়ক সার্ভিস বিঘ্নিত হচ্ছে। বিশেষ করে এইচআইভি প্রতিরোধ, পরীক্ষা ও চিকিৎসায় বেশি প্রভাব পড়েছে। মানুষ বিনামূল্যে গুরুত্বপূর্ণ এন্টিরেট্রোভাইরাল ট্রিটমেন্ট (এআরটি) সেবা পেতো। এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে ভাইরাসকে দামিয়ে রাখতো, যাতে তা শনাক্তকরণের পর্যায়ের বাইরে থাকে এবং এর মধ্য দিয়ে জীবন রক্ষা করা সম্ভব হতো। কিন্তু এই চিকিৎসার অর্থ বন্ধ হয়ে গেছে। 
আফ্রিকান দেশগুলো এইচআইভি মহামারির সবচেয়ে বেশি বোঝা বহন করছে। বিশ্বব্যাপী এইচআইভিতে আক্রান্ত মোট ৩৮ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে সাব-সাহারান আফ্রিকায় আনুমানিক ২.৫ কোটি এইচআইভিতে আক্রান্ত। ইউএনএইডস অনুসারে, ২০০৩ সালে শুরু হওয়া পেপফার ২.৬ কোটি জীবন বাঁচানোর কৃতিত্ব পেয়েছে। শুরু থেকেই এই কর্মসূচির ব্যয় প্রায় ১২০ বিলিয়ন ডলার।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার অনেক সহায়তা বিষয়ক গ্রুপকে জানানো হয়েছে, ইউএসএইডের অধীনে তাদেরকে যে অর্থ দেয়া হতো তা বাতিল করা হয়েছে।

সহায়তা কর্তনের ঘোষণার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি জরুরি সহায়তা ঘোষণা করেছে। তাতে বলা হয়েছে, জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা চালু করা হবে। এর মধ্যে থাকবে এইচআইভি চিকিৎসা। এর প্রতিরোধমুলক কর্মসূচি নয়। এর জন্য অনুমোদন পেতে সংগঠনগুলোতে ৩০ দিনের জন্য একটি ওয়ার্ক প্লান ও বাজেট  পর্যালোচনা ও অনুমোদনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। 
সূত্র: আলজাজিরা
 
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত