মাইজদীতে স্কুলছাত্রীকে অপরণের পর ধর্ষণের ঘটনায় মো. মাসুদ নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভোরে শহরের হাউজিং এলাকায় অচেতন অবস্থায় অপহৃত স্কুলছাত্রীকে ফেলে চলে যায় অপহরণকারী। পরে অভিযান চালিয়ে মাসুদকে আটক করা হয়।
ধর্ষক মাসুদ আলমের (২৬) বাড়ি বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের মাধবসিংহ গ্রামের শহরবাড়ী এলাকায়। প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে ভুক্তভোগীর মোবাইল ট্র্যাক করে মাসুদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর মা জানান, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিদিনের মতো স্কুলে গেলেও মেয়ে বাড়ি ফেরেনি। আত্মীয়-স্বজনদের কাছেও কোনো খোঁজ না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি। এরপর ভোর রাতের দিকে কে বা কারা মেয়েটিকে বাসার সামনে অচেতন অবস্থায় ফেলে যায়।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত মাসুদ আলম সৌদি আরব প্রবাসী। দেশে থাকা অবস্থায় গত কয়েকমাস ধরে মোবাইলে ও তার আগে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করতেন মাসুদ। এসব বিষয়ে ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে মাসুদকে বারণ করা হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছাত্রীর কিছু আপত্তিকর ছবি তৈরি করে তাকে ব্লাকমেইল করেন।
তারা আরও জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিদেশ থেকে দেশে আসেন মাসুদ। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ে যাওয়ার উদ্দেশে মাইজদীর হাউজিং বাসা থেকে বের হয় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। এরপর থেকে সে আর বাসায় ফিরে আসেনি। এ ঘটনায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হলে পুলিশ ভুক্তভোগীর মোবাইলের সবশেষ অবস্থান চট্টগ্রামে শনাক্ত করে। শনিবার ভোরে হাউজিং এলাকায় তাদের বাসার সামনে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের লোকজন।
ছাত্রীর বরাত দিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে মাসুদ ও তার কয়েকজন সহযোগী ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে অপহরণ করে চট্টগ্রামের একটি বাসায় নিয়ে যায়। পরে সেখানে ভয়ভীতি দেখিয়ে কোর্টে এফিডেভিটের মাধ্যমে তাকে বিয়ে ও পরবর্তীতে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণ করেন মাসুদ। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে অভিযুক্ত মাসুদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।