আওয়ামী লীগের ভোল্ট পাল্টে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় বিএনপির নেতা পরিচয়ে এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আনোয়ার হোসেন, সাখাওয়াত ও সাহাবুদ্দিন। তারা এখন বিএনপির নেতা হয়ে শুরু করেছেন নতুন রাজত্ব।
জেলা পর্যায়ের নেতাদের নাম বলে সাধারন মানুষদের ভয়ভীতি দেখানো আওয়ামী লীগ পরিচয়ধারী এ তিন নেতা চলছে বীরদর্পে। অথচ বিগত আমলে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী হামলা মামলার শিকার হলেও এখনও হচ্ছে বঞ্চনার শিকার।
২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভোল পাল্টে তারা এখন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়ন কৃষক দলের আহবায়ক মো. আনেয়ার হোসেন ও মো. সাখাওয়াত হোসেন যুগ্ম আহবায়ক পদে স্থান পেয়েছেন। এছাড়াও সদস্য সচিব হিসেবে পদ পেয়েছেন সাহাবুদ্দিন সোহেল।
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে গত ৫ আগস্টের আগে আনোয়ার ও সাখাওয়াত এবং সাহাবুদ্দিন সোহেল ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা। আন্দোলনের সময় ছাত্রদের দমাতে আওয়ামী লীগের হয়ে তারা তাদের বাহিনী নিয়ে বিভিন্ন রকম সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।
এছাড়াও তাদেরকে বিগত দিনে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মিছিল মিটিং ও নির্বাচনী প্রচার প্রচারনার কার্যক্রমে অংশ নিতে দেখা গেছে। উপজেলা ও জেলার আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে তাদের নিয়মিত ওঠাবসা ছিল। নির্বাচন আসলেই নৌকা প্রতীকে চেয়েছেন ভোট। নিজেদের এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতেন আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, বিগত ১৭ বছর আমরা আনোয়ার ও শাখাওয়াতকে আওয়ামী লীগ নেতা বলেই জানতাম। এবং তারা আ.লীগের রাজনীতিতে থেকে বিভিন্ন সময় আমাদের নিকট ভোট চাইতে বাড়িতে আসতেন।
আওয়ামী লীগ থেকে সকল সুযোগ-সুবিধা নেয়া নেতা ৫ ই আগষ্টের পর বিনপির কমিটিতে কিভাবে স্থান পেলেন এ নিয়ে জনমনে নানা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এছাড়াও ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম আকন এর অফিসে বিক্ষব্ধ জনতা আগুন দিলে সাখাওয়াত তা ভিডিও করে সাইফুল আকনকে প্রেরণ করেন। আর সেই ভিডিও দিয়ে সাইফুল আকন ৫ বিএনপির নেতাকর্মীর নামে মামলা দায়ের করেন।
আওয়ামী লীগ নেতাকে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে সদস্য করায় বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। আর এই ক্ষোভ থেকেই জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঝালকাঠি কৃষকদলের জেলা কমিটি বরাবর এই আওয়ামীলীগের দোষরদের কমিটি বাতিল চেয়ে লিখিত অভিযোগ ও বিভিন্ন সময়ের মিছিল মিটিংয়ের ছবি সংযুক্ত করে প্রেরণ করেন। এবং এ কমিটির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করে ফের কমিটি গঠনের দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে নলছিটি থানা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক শামিম মল্লিক জানান, আমরা লিখিত অভিযোগ ও ছবি পেয়েছি। আমরা এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব।
অপরদিকে ঝালকাঠি জেলা কৃষকদলের সভাপতি তকদির হোসেন বলেন, বিএনপির যেকোন কমিটিতে আওয়ামী ঘরনার লোক থাকা পাপ। আমরা সাংগঠনিক মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।