শিবালয়ের ষাইটঘর তেওতা এলাকার জুলহাস মোল্লা (২৮) নামের এক যুবক নিজেই বিমান তৈরি করে স্থানীয় এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। নিজের তৈরি করা আরসি বিমান আকাশে উড়িয়েছেন। আর বিমান চালানোর দৃশ্য দেখতে বহু উৎসুক মানুষ যমুনার চরে ভিড় করেন।
মঙ্গলবার সকালে দিকে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করে জাফরগঞ্জের যমুনার চরে জুলহাসের নিজ হাতে তৈরি বিমান আকাশে উড্ডয়ন করেন। মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বহু মানুষ জুলহাসের উদ্ভাবন দেখতে যমুনার পাড়ে ভিড় জমায়।
জানা যায়, জুলহাস মোল্লা এস এস সি পাশ করেছেন । তিনি পেশায় একজন ইলেকট্রনিক মিস্ত্রি । তিনি রাজধানী ঢাকায় কর্মরত আছেন। চার বছর পূর্বে হঠাৎ তার মাথায় রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে বিমান তৈরি করার চিন্তা আসে। কিন্তু তখন তাতে তিনি কোন সফলতা পাননি। পরে গত এক বছর চেষ্টা করে তিনি বিমানটি তৈরি করতে সক্ষম হন। টাকা পয়সা তেমন না থাকায় পাম্প ইঞ্জিন আর অ্যালুমিনিয়াম এসএস দিয়ে মূলত বিমানটি তৈরি করা হয়। বিমানের ওজন ১শ' কেজি।
আরও জানা যায়, গতি পরিমাপের জন্য একটি ডিজিটাল মিটার লাগানো হয়েছে। আর অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে বিমানের পাখা তৈরি করা হয়েছে। বিমানের ইঞ্জিন অকটেন অথবা পেট্রল দিয়ে করবে। আর ঘণ্টায় গতি সর্ব্বোচ ৭০ কি.মি. হবে।
জুলহাস মোল্লা বলেন, আমি জীবনে কখনোই বিমানে চড়ে আকাশে উড়তে পারিনি। তাই নিজের তৈরি বিমান নিয়ে আকাশে উঠতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি যখন বিমান তৈরী শুরু করি তখন পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী আমাকে পাগল ভাবত। আর এখন আকাশে বিমান উড়ানো দেখে সবাই আমাকে অনেক উৎসাহ দিচ্ছে । আমি সকলের কাছে দোয়া চাই, ভবিষ্যতে যেন আমি আরো ভালো কিছু করতে পারি।
তেওতা ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, তেওতা এলাকার ছেলে জুলহাসকে নিয়ে আমি গর্ববোধ করি। ওর অসাধারণ উদ্ভাবনী তৈরি এ বিমান চালানো দেখে আমি গর্বিত। জুলহাসকে সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ দিলে ও সর্বাত্মক সহায়তা করলে জুলহাস কে দিয়ে আরো ভালো কিছু করা সম্ভব।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মানেয়ার হোসেন মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, আমি গতকাল সংবাদ পেয়ে জুলহাসের এমন উদ্ভাবনী বিমান দেখতে এসেছি। আমি সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জুলহাসকে প্রয়োজনীয় সহায়তার করার ব্যাপারে চেষ্টা করব। প্রত্যন্ত এলাকার জুলহাসের এমন উদ্ভাবনী আবিষ্কার দেখে সবাই মুগ্ধ ।