শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রয়াত এইচটি ইমামের ছেলে ও সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) তানভীর ইমামের বাসায় ‘বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ’ মজুদ রাখা আছে। সেখানে অভিযান চালাবে ‘বিপ্লবী ছাত্রজনতা’— বেনামে এমন বার্তা পাঠানো হয় গণমাধ্যমে।
পরে ফটক ভেঙে ঢুকে গুলশানের একটি বাসভবন তছনছ করেছে একদল যুবক। প্রায় আধাঘণ্টা পরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও তারা ছিলেন নির্বিকার।
গত রাত ১২টার দিকে গুলশান-২ এর ৮১ নম্বর সড়কের এইট-আই নম্বর বাড়িতে এ অভিযান ও তল্লাশি চালানো হয়। এই অভিযানে শুরুতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনও সদস্যকে দেখা যায়নি, তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন এবং লাইভ সম্প্রচার করেন।
জানা যায়, রাত সাড়ে ১১টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে বেনামে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে এই ‘অভিযানের’ কথা জানানো হয়। এরপর গুলশান ২-এর বিচারপতি সাহাবুদ্দিন পার্কের সামনে প্রায় শতাধিক যুবক জড়ো হন। রাত ১২টার দিকে তারা মিছিল নিয়ে বাসাটিতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এসময় বাড়ির সিকিউরিটি গার্ড তাদের বাধা দিলেও কয়েকজন দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করেন।
পরে গেট খুলে দিলে শতাধিক যুবক বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে তল্লাশি চালায়। তারা ফ্ল্যাটের প্রতিটি কক্ষে খুঁজে দেখেন, বিভিন্ন লাগেজ, ড্রয়ার ও সিন্দুক ভেঙে তল্লাশি করে। তল্লাশির প্রায় আধাঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে গুলশান থানা পুলিশ উপস্থিত হন।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া এভাবে কারও বাসায় অভিযান চালানো যায় কিনা, জানতে চাইলে প্রবেশকারী এক যুবক বলেন, ‘আমরা যা করার করছি, আপনারা যা করার করেন।’
এসময় পরিচয় জানতে চাইলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ওই যুবক। এক পর্যায়ে বলেন, ‘আমি একজন সাধারণ মানুষ, আমজনতা’।
কী পাওয়া গেলো—
নিজেকে ‘ছাত্র প্রতিনিধি’ পরিচয় দিয়ে অভিযানে থাকা যুবকদের মধ্যে রাজীব নামে একজন জানান, তাদের কাছে গোপন তথ্য ছিল— তানভীর ইমামের বাসায় অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও বিপুল অর্থ মজুদ রয়েছে। তবে অভিযানের সময় এমন কিছু পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশের সদস্যরাও প্রতিটি কক্ষ পরিদর্শন করেন। তারাও অবৈধ কোনো বস্তু খুঁজে পাননি।
তল্লাশি চলাকালে তানভীর ইমামের পরিবারের কোনও সদস্যকে ফ্ল্যাটে পাওয়া যায়নি। শুধু বাড়ির কাজের লোক ও সিকিউরিটি গার্ড উপস্থিত ছিলেন। এসময় বাড়ির একজন নিজেকে বাড়ির কর্মী পরিচয়ে বলেন, এটি মূলত তানভীর ইমামের সাবেক স্ত্রীর বাসা।
মধ্যরাতে একটি আবাসিক ভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়া এমন অভিযান নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। তবে এ ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।