মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৯ বৈশাখ ১৪৩২
মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫
৫ আগস্টের পর দেশে গণপিটুনিতে নিহত ১১৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বুধবার, ৫ মার্চ, ২০২৫, ৮:২৪ PM
গত সাত মাসে দেশে গণপিটুনির অন্তত ১১৪টি ঘটনা ঘটেছে। এতে ১১৯ জন নিহত এবং ৭৪ জন আহত হয়েছেন। আর গত ১০ বছরে গণপিটুনিতে মারা গেছেন কমপক্ষে ৭৯২ জন। আহত হয়েছেন ৭৬৫ জন। 

আজ বুধবার মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) এসব তথ্য জানিয়েছে।

এইচআরএসএস বলছে, সম্প্রতি গণপিটুনির মাধ্যমে মানুষ হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। ডাকাত, চোর, ছিনতাইকারী সন্দেহেও গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। এসবের বাইরে ধর্মীয় অবমাননা এবং ছেলেধরার অভিযোগেও গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে। গণপিটুনির ঘটনায় থানায় মামলা হলেও সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতের ঘটনা খুবই কম। এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা আইনের আওতায় না আসায় এ ধরনের ঘটনা থামছে না।

গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২০১টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে গত বছরে। গত বছর গণপিটুনিতে মারা গেছেন ১৭৯ জন। আহত হয়েছেন ৮৮ জন। গত বছরের মতো গণপিটুনির ঘটনা বেশি ঘটেছে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে। এই দুই বছর গণপিটুনিতে ২৩২ জন নিহত হন।

গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে অন্তত ৩০টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ১৯ জন আর আহত হয়েছেন ২০ জন।

দেশে গণপিটুনির ঘটনা আগে ঘটলেও ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পালাবদলের পর এ ধরনের ঘটনা নতুন মাত্রা পায়। আগে চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা বেশি ঘটলেও এ সময় দলবদ্ধভাবে হামলার ঘটনা বেড়েছে, যা ইতিমধ্যে ‘মব’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপর এ ধরনের ঘটনাকে মানুষের রাগ-ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখেন অনেকে। তবে ছয় মাস পর এসেও এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অধিকারকর্মীরা এ জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন।

সর্বশেষ গত ৩ মার্চ রাতে চট্টগ্রামের এওচিয়া এলাকায় মাইকে ‘ডাকাত পড়ার’ ঘোষণা দিয়ে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে দলবদ্ধভাবে গুলশানের একটি বাসায় ঢুকে ‘তল্লাশি’র নামে জিনিসপত্র তছনছ ও লুটপাট করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ডাকাতির ঘটনায় শরীয়তপুরে সাতজনকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এতে পাঁচজন মারা যান। এর এক দিন আগে রাজধানীর উত্তরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে পায়ে দড়ি বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এসব ঘটনার বাইরে বগুড়া, মাদারীপুর, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, খুলনা, মিরসরাই, যাত্রাবাড়ী, টঙ্গী, রাজশাহী ও বরিশালেও গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে।

এইচআরএসএসের নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক ক্ষোভের কারণে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে গণপিটুনির ঘটনা ঘটাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষত পুলিশ ও র‌্যাব এখনো পুরোপুরি কার্যকর নয়। আবার চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে ক্ষোভের কারণে অনেকে সন্দেহ করে গণপিটুনির ঘটনা ঘটাচ্ছে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত