ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (বিয়াম) ভবনের একটি কার্যালয় কক্ষে বিস্ফোরণের পর আগুন লাগার ঘটনাটি দুর্ঘটনা, না কি নাশকতা তা এখনও সুরাহা করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ‘এসি বিস্ফোরণ’ থেকে সৃষ্ট দুর্ঘটনা হিসেবে তুলে ধরা হলেও বিসিএস (প্রশাসন) বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের দাবি, এটি ‘নাশকতা’। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে বিসিএস (প্রশাসন) বহুমুখী সমবায় সমিতির কার্যালয় কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
বিয়াম ভবনে ‘বোমা হামলা’ হয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে পরদিন শুক্রবার বিবৃতি আসে। পরে অবশ্য সেই বিবৃতি প্রত্যাহার করে নেয় দলটি।
তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশ বলছে, তারা ক্লোজ সার্কিট (সিসি) টিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এক যুবককে সন্দেহ করছে, তাকে ধরতে পারলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনার পাঁচ দিন পর বুধবার বিকালে আহত গাড়িচালক মো. ফারুক মীর (৩৪) জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ নিয়ে বিয়াম ভবনের ওই কক্ষে থাকা দুজনেরই মৃত্যু ঘটে।
বিস্ফোরণের পর গত শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে অফিস সহায়ক আব্দুল মালেক খানকে (৪০) আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিয়ামের এ স্থাপনায় বিভিন্ন দপ্তরের পাশাপাশি মিলনায়তন এবং বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে দশ তলা ভবনের পাঁচ তলায় বিসিএস প্রশাসন কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতির একটি কার্যালয় কক্ষে আগুন লাগে।
বৈদ্যুতিক গোলোযোগ থেকে সেখানে এসিতে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে সেদিন ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার খালেদা ইয়াসমিন বলেছিলেন।
তবে বিসিএস (প্রশাসন) বহুমুখী সমবায় সমিতি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ঘটনাটিকে নাশকতা হিসেবে দাবি করেছে। সমিতির সংবাদ বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে পাওয়া এক সন্দেহভাজন যুবকের ছবিও সংযুক্ত করে দেওয়া হয়।
সেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিসিটিভির সংগৃহীত ফুটেজে দেখা যায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মাথায় ক্যাপ, মুখে মাস্ক, পায়ে স্যান্ডেল পরিহিত অবস্থায় মোজা পরা ও হাতে হ্যান্ড গ্লাভস ২৫-৩০ বছর বয়সী এক সন্দেহভাজন যুবক বিয়াম ভবন মাঠের পশ্চিম দিক থেকে এসে সিঁড়ি দিয়ে পঞ্চম তলায় চলে যায় এবং ওই তলার সিসি ক্যামেরাগুলো বন্ধ করে দেয়।
কিছুক্ষণ পরে ৫০৪ নম্বর কক্ষে প্রচন্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পাওয়া যায়। কয়েক মুহূর্ত পরে ওই ব্যক্তি দ্রুত সিঁড়ি বেয়ে তৃতীয় তলায় একটি খোলা কক্ষে প্রবেশ করে এবং সেখানে সে প্রায় এক ঘন্টা অবস্থান করে নিরাপদে বিয়াম ভবন ত্যাগ করে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে প্রতীয়মান হয় যে এটি একটি “পরিকল্পিত নাশকতার” ঘটনা।