শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ওরফে বুড়ির নাতি সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্নার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ডাবল মার্ডারসহ একাধিক হত্যা মামলার আসামি সাজ্জাদকে ‘কাঁড়ি কাঁড়ি’ টাকা দিয়ে জেল থেকে নিয়ে আসবেন বলে ভিডিওতে জানিয়েছেন তিনি।
ভিডিওতে তামান্না বলেন, ‘আমার জামাই গতকাল রাতে অ্যারেস্ট হইছে। এটা নিয়ে এত হাই হুল্লাস (হা হুতাশ) করার কিছু নাই। মামলা যখন আছে, অ্যারেস্ট হবে। এগুলো নিয়ে এত টেনশন করা, দুঃখ প্রকাশ করা, কান্নাকাটি করার কিছু নাই। আপনারা যারা ভাবতেছেন আমার জামাই অ্যারেস্ট হইছে আর কোনোদিন বের হতে পারবে না, ওদের জন্য এক বালতি সমবেদনা। আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। আমার জামাই বীরের বেশে চলে আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন যারা এই ঘটনা ঘটাইছে, তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না; মাথায় রাইখো। এতদিন আমরা পলাতক ছিলাম, এখন তোমাদের পলাতক থাকার পালা। আমার জামাই আইনি প্রক্রিয়া শেষে আমার কাছে আসবে। তখন খেলা শুরু হবে। খেলা মাত্র শুরু করছো তোমরা, শেষ করব আমরা। আমার জামাই সাজ্জাদের যারা সাপোর্টার আছো সবাই দোয়া করবা, যাতে ১০-১২ দিনের মধ্যে জামিন করাই ফেলতে পারি। ঠিক আছে, ধন্যবাদ।’
শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। রোববার (১৬ মার্চ) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালত এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. মফিজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, চান্দগাঁও থানার একটি হত্যা মামলায় সাজ্জাদের ১৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নগরীর চান্দগাঁও থানার অদুরপাড়ায় সংঘটিত তাহসিন হত্যা মামলার আসামি ছোট সাজ্জাদ। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে একদল যুবক প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে তাহসিনকে। এলাকার আধিপত্য নিয়ে দুই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সারোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা ও ছোট সাজ্জাদের বিরোধে তাহসিন খুন হন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাহসিন ছিলেন বাবলার অনুসারী।
এর আগে ‘বুড়ির নাতি’ নামে পরিচিত সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল পুলিশ। গত ২৮ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) হুমকি দিয়েছিলেন সাজ্জাদ। এরপর ৩০ জানুয়ারি সাজ্জাদকে ধরতে তথ্যদানকারী কিংবা সহায়তাকারীকে নগদ অর্থ পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে সাজ্জাদ বলেন, ওসি আরিফ দেশের যে প্রান্তেই থাকেন না কেন, তাকে নগরের অক্সিজেনে ধরে এনে পেটাব। প্রয়োজনে মরে যাব। কিন্তু হার মানব না। ওসিকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তুকে ল্যাংটা করে পেটাবো’। এ ছাড়া পুলিশ কমিশনারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ওসি আরিফ চাঁদাবাজিসহ আমার সন্তান হত্যায় জড়িত। তাকে যাতে বদলি করা হয়। পরে এ ঘটনায় জিডি করেন বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমান।