পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় ডাকাতির সময় গুলি করে মো. মিজান (২১) নামে এক যুবককে হত্যার দায়ে পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোক্তাগীর আলম ছয় আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। এ সময় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সাত জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ওয়ালিদ হাসান বাবু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— ভান্ডারিয়া উপজেলার উত্তর শিয়ালকাঠি গ্রামের সুলতান হাওলাদারের ছেলে মো. সালাম হাওলাদার (৫০), মোহব্বত আলী মাঝির ছেলে আলমগীর মাঝি (৫৮), আব্দুল আজীজ এর ছেলে আব্দুল মালেক হাওলাদার (৬৬), আব্দুল মজিদ মোল্লার ছেলে ফিরোজ মোল্লা (৫৭), আলফাজ উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে মো. আইয়ুব আলী হাওলাদার (৫৮)। এদের মধ্যে সালাম হাওলাদার এবং মালেক হাওলাদার আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন— ওসমান ফরাজি, মিল্লাত হোসেন, জাকির খলিফা, ফয়সাল, মাসুম মৃধা, মাসুদ মৃধা এবং হেমায়েত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ২ নভেম্বর ভান্ডারিয়া উপজেলার উত্তর শিয়ালকাঠি গ্রামের কাপালির হাট বাজারের মো. রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির দোকানে ১০ থেকে ১২ জন ডাকাত ডাকাতির জন্য আসে। এসময় রফিকুল ইসলাম দোকানের মধ্যে ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুম ভেঙে গেলে তার চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে ডাকাত সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যেতে থাকেন। এ সময় ডাকাতদের সামনে পড়লে গুলিতে দোকানদার রফিকুল ইসলামের প্রতিবেশী মিজান (২১) গুলিবিদ্ধ হয়।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় দোকানদার রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই দিনই ভান্ডারিয়া থানায় একটি ডাকাতি ও হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার ১ বছর পর ২০০৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর ভান্ডারিয়া থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এস আই) আব্দুল গফফার মোল্লা আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। মামলায় ২৩ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ গ্রহণে শেষে আদালত আজ এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ওয়ালিদ হাসান বাবু এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আহসানুল কবির বাদল।