বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাঙামাটিতে দোয়া মাহফিল ও ইফতার বিতরণ কর্মসূচির পর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দীন ইমরোজ (২৮)কে গ্রেফতার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) রাত ১০টায় শহরের আলম ডক ইয়ার্ডস্থ নিজ বাসায় থেকে তাকে আটক করা হয়।
জানা যায়, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা শাখার নেতাকর্মীদের উদ্যোগে শহরে দোয়া মাহফিল ও ইফতার বিতরণ’ কর্মসূচি পালন করেন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দীন ইমরোজ।
পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা কার্যক্রমের ছবি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। এরপর স্থানীয় বিএনপি জামায়াতের কর্মীরা নজরে আসলে তার বাসা ঘেরাও ও তাকে মারধর করা হয় বলেন অভিযোগ করেন ইমরোজের পরিবার। পরবর্তীতে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে।
অন্যদিকে স্থানীয় একটি গণমাধ্যমকে কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সাহেদ উদ্দিন জানান, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে ছাত্রলীগ নেতা ইমরোজ তার বাসায় অবস্থান করছেন এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ছাত্রলীগ নেতা অপারেশন ডেভিল হান্টের আসামী এমন তথ্য জানিয়ে ওসি আরো জানান, আমরা তাকে দীর্ঘদিন ধরে খোঁজছিলাম, অবশেষে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়েই আমরা তাকে অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করেছি।
গ্রেফতারকৃত মীর মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দীন ইমরোজ(২৮) রাঙ্গামাটি জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তার পিতা মো: জমির উদ্দিন রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক পদে থাকলেও আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদারের বিদ্রোহি হিসেবেই পরিচিত ছিলেন।
এদিকে, রাঙ্গামাটি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রনি তার ফেসবুক ষ্ট্যাটাসে রাঙ্গামাটির ছবি দিয়ে “ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাঙ্গামাটি জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেগ্যে দোয়া মাহফিল ও ইফতার বিতরণ” এই ষ্ট্যাটাস আপলোড দেওয়ার পরপরই মূলত সকলের নজরে আসে বিষয়টি।
ছাত্রলীগের নেতা ইমরোজ নিজেই তার সহপাটিদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত প্যাকেটে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা গেছে।
তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইমরোজ ৫ আগষ্টের পর থেকে রাঙ্গামাটি শহরে ওএমএস ডিলারে চাল বিক্রি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল এবং নিজ বাড়ীতে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছিল।
উল্লেখ্য: গত ২৩ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। একই সঙ্গে এই ছাত্রসংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’–এর ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল এবং এই আইনের তফসিল-২–এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামের ছাত্রসংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল।