রবিবার ২০ এপ্রিল ২০২৫ ৭ বৈশাখ ১৪৩২
রবিবার ২০ এপ্রিল ২০২৫
দুর্গাপুরে ১৫ মাসে ৪১ বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি
দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০২৫, ৫:৪৯ PM
নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গত ১৫ মাসে ৪১টি ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে গ্রাহকেরা নতুন ট্রান্সফরমার কিনতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রায়ই ট্রান্সফরমার চুরি হচ্ছে। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

দুর্গাপুর জোনাল কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এই কার্যালয়ের অধীনে গ্রাহকসংখ্যা প্রায় ৬৪ হাজার। বিভিন্ন গ্রামে ও শহরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎব্যবস্থা চালু রাখতে বিভিন্ন স্থানের খুঁটিতে ৫, ১০, ১৫, ২৫, ৩৭.৫ ও ৫০ কেভি ধারণসম্পন্ন ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হয়েছে। এই ট্রান্সফরমারগুলোতে তামাজাতীয় মূল্যবান কয়েল থাকায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকায় হানা দিচ্ছে ট্রান্সফরমার চোর চক্র। সব চেয়ে বেশি চুরি হচ্ছে ৫ থেকে ১৫ কেভির ট্রান্সফরমার। চলতি বছরের এই মার্চ মাসেই চুরি হয়েছে পাঁচটি ট্রান্সফরমার। সর্বশেষ ২০ মার্চ গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নে জাগিরপাড়া এলাকা থেকেই এক রাতে তিনটি ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে।

এভাবে প্রতিনিয়ত চোর চক্র রাতের আঁধারে গ্রাম থেকে ট্রান্সফরমার চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। গ্রাহকদের এতে ক্ষতি হলেও চোর চক্রকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে না পারায় চুরি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের চলতি মাস মার্চ পর্যন্ত কুমুদগঞ্জ,মাদুরপাড়,রায় নগর, ঝানজাইল, কেট্টা, বড় কেট্টা, শাখাইয়া, নলজোড়া, বাড়ইপাড়া, শ্রীরামখিলা, পূর্ব বিলাশপুর, ভূলিগাঁও, পূর্ব বাকলজোড়া, খরচকি, মধুয়াকোণা, কালিকাপুর, শ্রীপুর, জাগির পাড়াসহ সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে প্রায় ২৫টি গ্রাম থেকে ৫ কেভির ১৫ কেভির পর্যন্ত মোট ৪১টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে।

জানা গেছে, চুরি হওয়া ৫ কেভির ট্রান্সফরমারের দাম ৪৯ হাজার টাকার উপরে, ১০ কেভির দাম ৬৭ হাজার টাকা এবং ১৫ কেভির দাম ৭৭ হাজার উপরে। প্রথমবার চুরি হলে ট্রান্সফরমারের অর্ধেক এবং দ্বিতীয়বার চুরি হলে ট্রান্সফরমারের সম্পূর্ণ মূল্য তাঁদের পরিশোধ করতে হচ্ছে, যা তাঁদের জন্য
রীতিমতো জরিমানা বলছেন বিদ্যুৎ গ্রাহকরা।

গত বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দিবাগত গভীর রাতে জাগিরপাড়া বাজারের রাইস মিল ব্যবসায়ী নাইম আহমেদের তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। এতে বিপাকে পড়েছেন তিনি।
নাইম আহমেদ জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান রাইচ মিল বন্ধ করে বাড়িতে চলে যান। এরপর শুক্রবার (২১ মার্চ) সকাল ৬টার দিকে খবর পেয়ে এসে দেখেন ট্রান্সফরমার চুরি হয়ে গেছে।

স্থানীয় কৃষক আবুল কাশেম বলেন, প্রায়ই ফসলি জমি থেকে সেচের ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটছে। শুধু তাই নই আবাসিকগুলোও চুরি করে যায়। ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে আমাদের। একটি ট্রান্সফরমার কিনতে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা লাগে।

এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুতের দুর্গাপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হাফিজুর রহমান বলেন, ট্রান্সফরমার চুরি বেড়ে গেছে। আমাদের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে।

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, ট্রান্সফরমার চুরির বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। চুরির সঙ্গে জড়িতদের সনাক্তের চেষ্টা চলমান আছে আমাদের।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত