দেশের অন্যতম পর্যটন উপজেলা শ্রীমঙ্গল। এ উপজেলায় রয়েছে প্রায় শতাধিক ছোট-বড় পর্যটন স্পট। এ ছাড়া এ উপজেলায় রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস। তাদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি। প্রতিবছর ঈদে বিপুলসংখ্যক ভ্রমণপিপাসু পর্যটকের সমাগম হয় শ্রীমঙ্গলে। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
ঈদের টানা ৯ দিনের ছুটিতে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হয়ে আছে এখানকার বিভিন্ন পর্যটন স্পট ও রিসোর্ট, কটেজ, বাংলোগুলো। দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিপাসুদের প্রথম পছন্দ হলো শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার পর্যটন স্পটগুলো। এই দুই উপজেলার পর্যটন স্পটগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে পাঁচ তারকা মানের টি রিসোর্ট এন্ড গলফসহ শতাধিক রিসোর্ট, ইকো কটেজ, হোটেল। যার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। আগামী কয়েক দিনে শতভাগ বুকিং সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন হোটেল- রিসোর্ট-কটেজ মালিকরা।
শ্রীমঙ্গল উপজেলায় রয়েছে উঁচু-নিচু পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে সবুজের গালিচায় মোড়ানো ৪৪টি চা-বাগান। এ ছাড়া কমলগঞ্জের মনোমুগ্ধকর পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, হামহাম জলপ্রপাত, মাধবপুর লেক, পদ্মছড়া লেক, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ, মণিপুরী পল্লী, শমসেরনগর বিমানবন্দর, মণিপুরী ললিতকলা একাডেমি, শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সাগরসদৃশ হাইল হাওর, পাখির অভয়ারণ্য বাইক্কা বিল, ডিনস্টন সিমেট্রি, নিরালা পান পুঞ্জি, রাবার বাগান, চাউতলী বনাঞ্চল, ভাড়াউড়া লেক, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, চা কন্যা ভাস্কর্য, চা জাদুঘর, মণিপুরি, খাসিয়া, ত্রিপুরা, সাওতালসহ আরো অনেক নৃ-তাত্বিক জনগোষ্টির বাস, দার্জিলিং টিলা, লেবু-আনারস বাগানসহ শতাধিক মনোমুগ্ধকর পর্যটন স্পট।
এছাড়াও পর্যটকদের একটি বড় অংশ শ্রীমঙ্গলের নৃ-তাত্বিক জনগোষ্ঠীর পাড়াগুলোতে তাদের বিচিত্র জীবনধারা ও সংস্কৃতি দেখে মুগ্ধ হন। তাদের হাতের বোনা তাঁতের কাপড় কিনতেও পর্যটকরা ভুল করেন না। নৃ-গোষ্ঠির মানুষের আতিথেয়তায় পর্যটকরা হন মুগ্ধ।
রাধানগরের বৃষ্টি বিলাশ গেষ্ট হাউজের স্বত্বাধিকারী আনজিম ইসলাম রাফি বলেন, ‘এবারের ঈদে আমাদের রিসোর্টের সব কক্ষ বুকিং কনফার্ম হয়েছে। এবার অন্যবারের চেয়ে ভালো সাড়া পাচ্ছি।
শ্রীমঙ্গল আবাসন সেবা সংস্থার যুগ্ম আহ্বায়ক ও গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী সেলিম আহমদ বলেন, ‘কোনো উৎসব বা সরকারি লম্বা ছুটিতে মানুষ ঘুরতে বের হয়। এবারের ঈদের ছুটি বেশ লম্বা। আর এই লম্বা ছুটির কারণে মানুষ ঘুরে বেড়ানোর সময় পাবেন। ফলে দেশের সমৃদ্ধ পর্যটন স্থান শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের সমাগম হবে।’ বালিশিরা রিসোর্টের চেয়ারম্যান মো. শহীদুল হক জানান, ইতোমধ্যে তাদের রিসোর্টে শতভাগ বুকিং সম্পন্য হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, ইতোমধ্যে কটেজ- রিসোর্টগুলো ৮০ ভাগ বুকিং সম্পন্য হয়েছে। আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে শতভাগ বুকিং সম্পন্য হয়ে যাবে বলে রিসোর্ট মালিকদের ধারনা।
শ্রীমঙ্গল ট্যুরিস্ট পুলিশ সুত্র জানায়, ‘ঈদের বন্ধে পর্যটকদের ভ্রমণ নির্বিঘ্ন করতে আমাদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি পর্যটন স্পটে পর্যটন পুলিশ নিরাপত্তায় থাকবে। এছাড়াও মোবাইল টিম নিরাপত্তায় কাজ করবে।
শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, টানা ৯ দিনের ছুটিতে শ্রীমঙ্গলে আগত পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে পর্যটন স্পটগুলোতে ঘুরে বেড়াতে পারে সেজন্য শ্রীমঙ্গল পুলিশ সার্বক্ষণিক তৎপর থাকবে। এছাড়া পর্যটন স্পটগুলোতে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি পুলিশের মোবাইল টিম পর্যটকদের নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থানে থাকবে।