কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছনার শিকার হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুর বাড়িতে এবার হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যারা জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করেছেন, তাদের নির্দেশেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইয়ের পরিবার।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের লুদিয়ারা গ্রামে আবদুল হাইয়ের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় আবদুল হাই, তার স্ত্রী, পুত্রবধূ ও নাতি-নাতনিরা বাড়িতে ছিলেন। হামলাকারীরা বাড়ির গেট ও দরজা-জানালা ভাঙচুর করেন। তবে ঘরে প্রবেশ করতে পারেননি। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
হামলার বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই বলেন, ‘যারা আমার গলায় জুতার মালা পরিয়েছিল, তারাসহ একদল দুর্বৃত্ত বৃহস্পতিবার রাতে আমার বাড়িতে অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলা চালায়। হামলাকারীদের হাতে রামদা, চায়নিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ছিল। বাড়ির গেট, ঘরের দরজা-জানালায় কুপিয়েছে। ঘরের ভেতরে প্রবেশ করতে পারলে আমাকে প্রাণেই মেরে ফেলতো। পরে পুলিশ আসার খবর পেয়ে পালিয়ে গেছে তারা।’

মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইয়ের ছেলে গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ঘটনার প্রায় সাড়ে তিন মাস হয়েছে। আমার বাবাকে যারা গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত ও মারধর করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও ঘটনার মূল হোতাসহ আসামিরা এখনও গ্রেফতার হননি। আসামিরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। উল্টো আসামিরা বিভিন্নভাবে আমাদের হয়রানি করাসহ মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। মামলা তুলে না নেওয়ার জেরে রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা ৩০-৩৫ জন ছিল। আমার বাবাকে জুতার মালা পরানোর মামলার প্রধান আসামি আবুল হাশেম মজুমদার, স্থানীয় সালাউদ্দিন, আতিক, রাসেল, পেয়ার আহমেদ, আবদুল কাইয়ুম, আরিফুর রহমানসহ কয়েকজন হামলার ঘটনায় নেতৃত্ব ও ইন্ধন দিয়েছেন। গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছনার পর থেকে আমার বাবা ফেনীতে অবস্থান করেন। প্রশাসনের আশ্বাসে তিনি পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়িতে ঈদ করতে আসেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই রাতের অন্ধকারে বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়েছে।’
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে যুবলীগ নেতা বাড়িতে অবস্থান করছেন, এমন খবরে সেখানে হামলা চালিয়েছিল। দুর্বৃত্তরা মুক্তিযোদ্ধার বাড়ির গেট ও দরজা-জানালায় কিছু ভাঙচুর চালালেও ঘরে প্রবেশ করতে পারেনি। এর আগেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।’