ভয়াবহ ভূমিকম্পে মিয়ানমারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩৫৪ জনে। আহত হয়েছে ৪৮৫০ জন এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ২২০ জন।
আজ শনিবার (৫ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে মিয়ানমার সফররত জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতায় মানবিক ও সাম্প্রদায়িক দলগুলোর ভূমিকায় প্রশংসা করেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর খাবার ও ত্রাণ সামগ্রীর অভাব তীব্র আকার ধারণ করেছে। সামান্য কিছু খাবারের জন্য মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
ভূমিকম্প আঘাত হানার এক সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও দেশটির বিভিন্ন স্থানে এখনও অনেকেই বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন পার করছেন। এছাড়া বাড়ি-ঘর ধসে পড়ায় অনেকেই রাস্তায় দিন কাটাচ্ছেন।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৭ দশমিক ৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মিয়ানমারের বিভিন্ন অংশ থেকেই বিধ্বংসী এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। সড়ক ও সেতু ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে একদিকে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করাও কঠিন হয়ে পড়ছে।
বেশিরভাগ প্রাণহানি হয়েছে মান্দালয় ও নেপিদোতে। ইউনিসেফের মিয়ানমার প্রতিনিধি জুলিয়া রিস জানিয়েছেন, সেখানে ব্যাপক সহায়তা দরকার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেটি আরও বাড়ছে। জীবনরক্ষাকারী পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ কমে আসছে। আক্রান্ত এলাকাগুলোতে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সরবরাহের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে।
মিয়ানমার ফর দ্য ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির প্রোগ্রাম উপ-পরিচালক লরেন ইলারি বলেন, কী মাত্রায় ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, তা বর্তমান পর্যায়ে এসেও আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না। মান্দালয়ের অন্তত ৮০ শতাংশ ভবন ভেঙে পড়েছে।
দেশটির তিনটি হাসপাতাল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ২২টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা বলছে, আঘাত ও অস্ত্রোপচারের চিকিৎসার জন্য জরুরি সহায়তা দরকার। রক্ত সরবরাহ, চেতনানাশক, অপরিহার্য চিকিৎসা ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সহায়তা প্রয়োজন।