জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার একটি গ্রামীণ বাজারের সাতজন নৈশপ্রহরীদের বেঁধে চারটি দোকানে দুধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল শুক্রবার (৪ এপ্রিল) গভীর রাতে মোহনপুর বাজারে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এতে চারটি দোকানের প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
বাজারের দোকানি সূত্রে জানা গেছে, এই বাজারে আটজন নৈশপ্রহরী রয়েছেন। এরমধ্যে শুক্রবার রাতে একজন নৈশপ্রহরী আসেননি। সাতজন নৈশপ্রহরী ডিউটি করছিলেন। রাত ৩টার দিকে নৈশপ্রহরী রফিকুল ইসলাম প্রথমে কালো মুখোশপরা চারজন ব্যক্তিকে বাজারের সড়কে ঘোরাঘুরি করতে দেখে বাঁশি বাজান। মুখোশপরা ওই চার ব্যক্তি এসে নৈশপ্রহরী রফিকুলের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এতে তার মাথা দিয়ে রক্ত ঝড়তে শুরু করে।
ডাকাতেরা তার হাত-পা বেঁধে একটি দোকানের পাশে ফেলে রাখেন। এরপর ২০-২৫ জনের মুখোশপরা ডাকাত দল বাজারে অন্য ছয়জন নৈশ প্রহরীকে ধরে এনে মারধরের পর তার হাত-পা বেঁধে একই জায়গায় ফেলে রাখেন। ৪-৫ জন ডাকাত দল নৈশ প্রহরীদের ঘিরে রাখেন। অন্য ডাকাতেরা বাজারের সড়কের ওপর একটি মিনি ট্রাক এনে রাখেন।
ডাকাত দলের সদস্যরা বাজারের দুটি কীটনাশক, একটি মুদিখানা ও একটি ইলেকট্রনিক্স দোকানের তালা কেটে মালামাল লুট করে মিনি ট্রাকে তুলে নিয়ে পালিয়ে যান। ডাকাতেরা পালিয়ে যাওয়ার আগে নৈশপ্রহরী একজনের হাতের বাঁধন খুলে দেন। ডাকাতেরা চারটি দোকানের আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট করেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, আগে রাতের বেলায় পুলিশ বাজারে আসতো। এখন আর রাতের বেলায় পুলিশ বাজারে আসে না।
নৈশপ্রহরী রফিকুল ইসলাম বলেন, ২০-২৫ জন সশস্ত্র ডাকাত দলের সদস্যরা সবাই কালো মুখোশপরা ছিল। ডাকাতেরা আমাদের সাতজন নৈশপ্রহরীকে মারপিটের পর হাত-পা বেঁধে দোকানের পাশে ফেলে রাখে। ৪-৫ জন ডাকাত আমাদের পাহারা দিচ্ছিল। হলুদ রঙের মিনি ট্রাকে পালিয়ে যাওয়ার আগে ডাকাতেরা নৈশপ্রহরী কানা রফিকুলের হাতের বাঁধন খুলে দেন। এরপর আমরা সবাই মুক্ত হয়ে আশপাশের লোকজনদের ঘটনাটি জানিয়েছি।
কীটনাশকের দোকান স্বাদ ট্রেডার্সের মালিক ছানাউল ইসলাম বলেন, নৈশপ্রহরীদের বেঁধে রেখে বাজারের চারটি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুধু আমার দোকানের ৬-৭ লাখ টাকার মালামাল লুট করা হয়েছে। চারটি দোকান মিলিয়ে আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুনুর রশীদ পিন্টু বলেন, মোহনপুর বাজারের ৪টি দোকানে ডাকাতি হয়েছে। আমরা ডাকাতেরা চলে যাওয়ার পর ঘটনাটি জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় বাজারের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে রয়েছেন।