কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিউদ্দিন খানের ঘুষ বাণিজ্যের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশের পর তাকে থানা থেকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ছালেহ্ মো. আনসাঁর উদ্দিনকে প্রধান করা হয়। কমিটিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া এসি ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাকে থানা থেকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কাশিয়ানী সদর ইউনিয়নের বরাশুর এলাকার ইউপি সদস্য জাকির হোসেনকে মামলার ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা ও এসি নেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওসি শফিউদ্দিন খানের বিরুদ্ধে। ২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, ওসি শফিউদ্দিন খান ইউপি সদস্য জাকির হোসেনের কাছ থেকে শার্প অথবা এনার্জি প্যাক ব্র্যান্ডের দুই টনের একটি এসি কিনে দেওয়ার কথা বলেন। গোপালগঞ্জে না পাওয়া গেলে ঢাকা থেকে কিনে এনে দিতে বলেন তিনি।
ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে গোপালগঞ্জ শহরের এলজি-বাটারফ্লাই কোম্পানির শোরুমের মেমো থেকে জানা যায়, গত ২৩ মার্চ জাকির নিজ নামে ৪০ হাজার টাকা জমা দিয়ে কিস্তিতে এলজি ব্র্যান্ডের একটি এসি কেনেন।
ভুক্তভোগী জাকির হোসেন জানান, হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় আসামি করার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন ওসি। শুধু তাই নয়, ৫০ হাজার টাকার মাছও ঘুষ নিয়েছেন। গত ২৩ মার্চ আবারও মামলার ভয় দেখিয়ে এক লাখ ৬৬ হাজার টাকার এসি কেনান। তিনি নিজে গোপালগঞ্জ এলজির শোরুমে গিয়ে পছন্দ করে নিয়েছেন এবং থানায় তার ব্যক্তিগত কক্ষে লাগিয়েছেন।
জাকির হোসেন বলেন, ‘এর আগেও মামলার ভয় দেখিয়ে ওসি আমার কাছ থেকে কয়েক দফা টাকা নিয়েছেন। আবার একটা এসি দাবি করেন। কাছে নগদ টাকা না থাকায় নিরুপায় হয়ে কিস্তিতে কিনে দিয়েছি। ঈদে ছেলে-মেয়েদের নতুন জামা-কাপড় পর্যন্ত কিনে দিতে পারিনি। এতেও ক্ষ্যান্ত হননি ওসি। ঈদের আগের দিন আবারও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল করে কিছু টাকা চান তিনি।’