চট্টগ্রামে ৫ আগস্ট গুলিতে ইউসুফ (৩৫) নামক এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী, একাধিক সাবেক এমপি, সাবেক মেয়রসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে ডবলমুরিং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের পিতা মোঃ ইউনুচ (৬৫)। মামলায় অজ্ঞাত আরো ২০০-৩০০ জনকে আসামী করা হয়েছে৷
ডবলমুরিং থানার ওসি কাজী মোঃ রফিক আহমেদ বাংলাদেশ বুলেটিনকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷
মামলার উল্লেখ যোগ্য আসামীরা হলেন, সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (৪৫), সাবেক এমপি চট্টগ্রাম-১০ মহিউদ্দিন বাচ্চু (৫০), সাবেক এমপি চট্টগ্রাম-১১ এম এ লতিফ (৫২), সাবেক চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন (৫২)। সাবেক কাউন্সিলরদের মধ্যে মোর্শেদ আক্তার চৌধুরী (৫০) ১১নং দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ড, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, ১৩নং ওয়ার্ড, তৌফিক আহম্মদ চৌধুরী, ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ড, সাবেক প্যানেল মেয়র ও সরাইপাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর সবুর লিটন, নুরুল হক, ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ড এর নাম রয়েছে৷ এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুম, আরশাদুল আলম বাচ্চু, নুরুল আজিম রনিসহ সর্বোমোট ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিহত মোঃ ইউসুফ (৩৫) হাটহাজারির পশ্চিম ধলই, ২নং ওয়ার্ডের জলই কোম্পানীর বাড়ির স্থায়ী বাসিন্দা৷ তবে তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তানদের নিয়ে ডবলমুরিং থানাধীন ঝর্ণাপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন। বিগত ৫/৬ বছর যাবৎ এলাকায় ঝর্নাপাড়া আইস ফ্যাক্টরী নামক একটি বরফের কারখানায় চাকুরি করতেন৷ ৫ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১১টার মধ্যে কোন এক সময়ে ডবল মুরিং থামাধীন দেওয়ানহাট মোড় পাকা রাস্তার উপর বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন৷
এজাহারে নিহতের পিতা ও মামলার বাদী মোঃ ইউনুচ (৬৫) উল্লেখ করেন, আমার ছেলে ইউসুফ প্রতিদিনের মতন সকাল আনুমানিক ৮টায় কর্মস্থলে যান৷ সেদিন রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে আর ছেলের স্ত্রীর বড় বোন রাবেয়া বসরী (৪২) মোবাইল ফোনে আমার ছেলের স্ত্রীকে জানায় মোঃ ইউসুফ (৩৫) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে দেওয়ানহাট মোড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু বরণ করলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া যায়। তখন আন্দোলনের কারণে বিভিন্ন দিকে গন্ডগোল থাকায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হইতে আমার ছেলের লাশ আমার ছেলের বউয়ের বড় বোন রাবেয়া বসরী (৪২) কে আমাদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য বললে সে একটি এ্যাম্বুলেন্সে করে আমার ছেলে লাশ আমার বাড়িতে নিয়ে আসে।
তখন আমরা আমার ছেলের বুকের মাঝখানে গুলিবিদ্ধ দেখতে পাই। পরে আমার ছেলের দাফন সম্পন্ন করি এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান এর নিকট হতে আমার ছেলের মৃত্যু সনদ সংগ্রহ করি। পরবর্তীতে আমি স্থানীয়ভাবে জানতে পারি যে, উপরোক্ত ১নং হইতে ৪নং ক্রমিকে বর্ণিত আসামীদের নির্দেশে এজাহারনামীয় ৫-২৩ নং ক্রমিকের
অন্যান্য আসামীগণ সহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা দেশব্যাপী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ইং ০৫/০৮/২০২৪ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ১৯:৩০ ঘটিকা হতে ২৩:৩০ ঘটিকার মধ্যবর্তী যে কোন সময় ডবলমুরিং মডেল থানাধীন দেওয়ানহাট মোড়ে একই উদ্দেশ্যে বেআইনী জনতাবদ্ধে হাতে লাঠি সোটা, লোহার রড়, ধারালো কিরিস, দেশী ও বিদেশী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশী ও বিদেশী অস্ত্র ব্যবহার করে এলাপাতাড়ীভাবে গুলিবর্ষণ করে। আসামীদের ছোঁড়া গুলি আমার ছেলে মোঃ ইউসুফ (৩৫) এর বুকের মাঝখানে লাগিয়া সে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু বরণ করে। আমি ও আমার পরিবার ছেলের মৃতুর শোকে থাকায় এবং বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারণে থানায় হাজির হয়ে এজাহার দায়ের করিতে বিলম্ব হইল।