পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান সামাজিক উৎসব বিঝু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু, সাংক্রাই, সাংলান, চাংক্রান, পাতা উদযাপন উপলক্ষে রাঙামাটিতে ঐতিহ্যবাহী বলি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকালে রাঙামাটির চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে বলি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ছোট, মাঝারি ও বড়দের মধ্যে বলি খেলায় ২২ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেছেন।
বড়দের মধ্যে বলি খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন খাগড়াছড়ির খবংপুড়িয়া এলাকার সৃজন চাকমা; রানার্সআপ হয়েছেন একই জেলার মহালছড়ি উপজেলার বাবু মারমা।
বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া বলি খেলা দেখতে ৩টার আগে থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোররা মারী স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে উপস্থিত হয়ে ভিড় জমাতে থাকেন। বলি খেলা দেখতে আসেন স্থানীয় বাঙালিরাও। বলি খেলার সময় দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা ও উচ্ছ্বাস ফুটে উঠেছে।
বিঝু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু, চাংক্রান, পাতা- ২০২৫ উদযাপন কমিটির আহবায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন বিশ্ব গণমানুষের সেবা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অংচিংনু মারমা। এতে উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইন্টু মনি তালুকদারসহ পাহাড়ি সমাজের বিশিষ্টজনরাও উপস্থিত ছিলেন।
গত ৯ এপ্রিল থেকে 'আদিবাসী জুম্ম জাতির অস্তিত্ব নিশ্চিতকরণে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনে অধিকতর সামিল হই' এই স্লোগানে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার ঘোষণা করে উদযাপন কমিটি। প্রথম দিন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, দ্বিতীয় দিন বিভিন্ন পাহাড়ি (জুম্ম) খেলা, তৃতীয় দিন বলি খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং শেষদিন শনিবার ভোরে পানিতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শেষ হবে চারদিনের আয়োজন।
এর আগে, গত ৩-৯ এপ্রিল পর্যন্ত রাঙামাটির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে সপ্তাহব্যাপী মেলার আয়োজন করে রাঙামাটি জেলা পরিষদ। আগামী ১৬ এপ্রিল রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙালহালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মারমা জাতিগোষ্ঠীর সাংগ্রাই জলোৎসব বা জলকেলির মধ্য দিয়ে সাঙ্গ হবে পাহাড়ের বর্ষবিদায় ও বরণের বর্ণাঢ্য আয়োজন।