গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার ভাদার্ত্তী গ্রাম আজ ‘মাদকের অভয়ারণ্য’ নামে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে চলমান মাদক ব্যবসা ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এলাকার কিশোর ও তরুণ প্রজন্মকে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মূল হোতা একজন সালাউদ্দিন নামে কুখ্যাত মাদক কারবারি।
মাদক কারবারি সালাউদ্দিন কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ৩ নম্বর ওয়ার্ড ভাদার্ত্তী গ্রামের মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সালাউদ্দিন যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, সেই দলের নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে অবাধে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। গত ১৭ বছর ধরে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার ছত্রছায়ায় সে এই ব্যবসা চালালেও, সম্প্রতি রাজনৈতিক পালাবদলের পর নিজেকে বিএনপির কর্মী দাবি করে এক বিএনপি নেতার আশ্রয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ভাদার্ত্তী গ্রামে একাধিক পরিবার মাদক কারবারে জড়িত। কেউ মাদক সরবরাহ করে, কেউ বিক্রি করে, আবার কেউ পাইকারি ক্রেতার ভূমিকায়। কিশোরদের ইয়াবার প্রতি আসক্ত করে তাদের দিয়েই চালানো হচ্ছে মাদক ডেলিভারির কাজ। এমনকি কিছু অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালককে মোটা টাকায় ব্যবহার করা হচ্ছে হোম ডেলিভারির কাজে।
তাদের অভিযোগ, মাদক বিরোধী অভিযান চালানো হলেও অভিযুক্তরা জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও সক্রিয় হয়ে পড়ে। সমাজে কেউ প্রতিবাদ করলে, তাদের ‘দলীয় লাইসেন্স’ আছে বলে হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়।
স্থানীয় এক অভিভাবক জানান, “আমার ছেলে আগে পড়াশোনায় ভালো ছিল। এখন তার আচরণ বদলে গেছে। বন্ধুদের সঙ্গে থাকতেও ভয় লাগে। কীভাবে সন্তানদের রক্ষা করব বুঝতে পারি না।”
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেন, “মাদক একটি সামাজিক ব্যাধি। আমরা ইতোমধ্যে ভাদার্ত্তীতে কয়েকবার অভিযান চালিয়েছি, কিছু গ্রেপ্তারও হয়েছে। আমাদের কাছে মাদক কারবারিতে ব্যাপারে তথ্য আছে, আমরা ভাদার্ত্তী গ্রামসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম কঠোর নজরদারিতে রেখেছি। তবে জনগণের সহযোগিতা ছাড়া এটা প্রতিরোধ সম্ভব নয়। মাদকের বিরুদ্ধে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “এ কাজে কিশোরদের ব্যবহার করা হলে, সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কেউ যদি এমন কাজে জড়িত থাকার তথ্য দেয়, আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব।”