প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের বক্তব্যের সমালোচনা ও তার পদত্যাগ দাবি করা এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
জানা গেছে, ওই শিক্ষকের নাম মো. মাহবুবর রহমান। তিনি জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক। তিনি ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদের’ সমন্বয়ক। এটি সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার আন্দোলনে গঠিত প্লাটফর্ম। শিক্ষক মাহবুবর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাটি করেছে জয়পুরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
জয়পুরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, মাহবুবর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টাকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগ আছে। তবে ওই শিক্ষক কী মন্তব্য করেছিলেন, তা বলেননি এ কর্মকর্তা।
মামলাটি হয় গত ৮ এপ্রিল, যেখানে মাহবুবর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া কেন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা কিংবা বিধি মোতাবেক শাস্তি দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে শোকজ করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে বিভাগীয় মামলা করার দিনই শোকজ পাঠানো হয় ওই শিক্ষককে। তাকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। আর তিনি ব্যক্তিগত শুনানি চাইলে তা শোকজের জবাবে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, উপদেষ্টাকে নিয়ে মাহবুবর রহমান বিরূপ মন্তব্য করে ফেইসবুক লাইভ করেছেন। তার পোস্টে শিক্ষক ও অন্যান্য ব্যক্তি বিরূপ মন্তব্য করেছেন, যা সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা পরিপন্থি।
মাহবুবর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা সংস্কারে কমিটি গঠন করে। সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১৩তম থেকে দশম গ্রেডে উন্নীত করার দীর্ঘদিনের দাবি পরিপ্রেক্ষিতে ওই কমিটি কাজ করছিল। কমিটির মেয়াদ ছিল ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এর মধ্যে গত ২৬ জানুয়ারি 'বেতনে না পোষালে অন্য পেশায় চলে যান- শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে প্রাথমিকের উপদেষ্টা' এবং 'এ মুহূর্তে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডের দাবি বাস্তবসম্মত নয়’ শিরোনামে প্রতিবেদন দেখি সংবাদ মাধ্যমে।
তিনি আরও বলেন, পরে অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে একটি ফেইসবুক লাইভে যুক্ত হয়ে আমি বলেছিলাম- কমিটি শিক্ষকদের বেতন নিয়ে যখন কাজ করছে, তখন উপদেষ্টার এমন মন্তব্য কমিটির কাজকে প্রভাবিত করতে পারে। উপদেষ্টা পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন, তাই তার পদত্যাগ করা উচিত।