খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবি বিষয়ে বুধবার (২৩ এপ্রিল) প্রেস ব্রিফিং করেছে শিক্ষক সমিতি।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, শিক্ষকদের গায়ে থুথু দেওয়া, অমর্যাদা করা, গায়ে হাত তোলাসহ সব অপমান অপদস্থের সুষ্ঠু বিচার হতে হবে। দোষ থাকলে ভিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আর দোষী না হলে ভিসির মর্যাদা সমুন্নত রাখা হোক। শিক্ষকদের অপমান অপদস্থের সুষ্ঠু বিচার হতে হবে। বিচার না হওয়া পর্যন্ত প্রয়োজনে শিক্ষকরা ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত থাকবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. শাহিদুল ইসলামসহ শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, শিক্ষকদের কথা পৌঁছানো লক্ষ্য। ১৮ ফেব্রুয়ারির ঘটনার জের ধরে আজ পর্যন্ত কুয়েট অশান্ত। উত্তরণের আশানুরূপ দিক নির্দেশনা নেই। শিক্ষা উপদেষ্টা ও ইউজিসির কমিটি তদন্ত করছে। আমরা কষ্ট নিয়ে এ আয়োজন করছি। ওই ঘটনায় শিক্ষকের মাথা থেকে রক্তও ঝরেছে। শিক্ষকরা ছাত্র ও প্রশাসনের সঙ্গে থেকে সুরাহার চেষ্টা করেছে। ছাত্রদের দাবি ছিল পাঁচটি। তার সবগুলোই যথোপযুক্তভাবে পূরণ করার চেষ্টা করেছে। পরে ৫ দফা ৬ দফায় মোড় নেয়। এটা নিয়ে শিক্ষকরা যৌক্তিক অবস্থান নেয় ও কথা বলে।
তারা বলেন, সময় যতো গড়ায় তত ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। শিক্ষকদের প্রতিটি কাজের ভিন্ন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত চিত্র আড়াল করা হয়েছে। কুয়েট প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করার কারণে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা করা হয়েছে। নামাজ পড়তে না দেওয়া, ইন্টারনেট বন্ধ, বিদ্যুৎ পানি বন্ধ করার অভিযোগ উঠেছে। এগুলোর কোনোটাই সত্য নয়। ছাত্রদের মুখোমুখি শিক্ষকরা হওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এগুলোর সুযোগ অন্য কেউ নিতে পারে। বারবার শিক্ষকদের হেয় করা হচ্ছে। শিক্ষকদের বক্তব্য নিয়ে ট্রল করা হয়, শিক্ষকদের অসম্মানিত করা হয়, শিক্ষকদের বার বার নিগৃহীত করা হয়েছে। বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন ব্যানারে ঘটনাটি ছড়িয়ে দিচ্ছে। কুয়েটে ফার্স্ট কেস হিসেবে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু কিসের ফার্স্ট কেস।
তারা বলেন, শিক্ষকরা সুনাম রক্ষায় অবিচল থাকবে, এটাকে ব্যাটেল গ্রাউন্ড বানিয়ে সুবিধা নিতে চাওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাই। অপরাধীদের শনাক্ত ও শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা প্রয়োজন হলে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে রাখবে। শিক্ষকদের আহত করার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে যাবে না। ছাত্রদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে আমরা একমত ভিসির নিয়োগে আমাদের হাত নেই। ওনাকে অপসারণের দায়িত্ব শিক্ষকদের নয়। ছাত্রদের পাঁচটি দাবির সাথে আমরা একমত। এভাবে বলার পরও ছাত্ররা শিক্ষকদের মর্যাদা দেয়নি। কিন্তু ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আমরা শিক্ষকরা কিছু করতে পারি না। আমরা কুয়েটের সুনাম রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে পারি। রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস গঠনে ভিসিকে সময় দেওয়া দরকার ছিল। দাবি বাস্তবায়ন না হলে আমরাও আন্দোলনে নামতে প্রস্তুত। ভিসিকে নিয়োগ দেয় সরকার। সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দোষী সাব্যস্ত হলে ভিসি অপসারণ হোক। দোষী না হলে তিনি অপসারণের সুযোগ নেই।