বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউনুস নবী থেকে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার পর আবার বিদ্যালয়ে যাওয়ায় মারধর করা হয়েছে। এ সময় তার পরনের জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলা হয়।
আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে নরোত্তমপুর উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও তার সহযোগীদের হাতে মারধরের শিকার হন ওই শিক্ষক।
প্রধান শিক্ষক ইউনুস নবী বলেন, ‘গত ২৪ অক্টোবর আমার কাছ থেকে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর আদায় করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও তার সহযোগীরা। দীর্ঘ ১১ বছর ধরে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুক্তার হোসেনের নেতৃত্বে একদল লোক জোর করে আমার কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেন। উপজেলার তৎকালীন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোতাসিম বিল্লার সামনে এ ঘটনা ঘটেছিল। বিষয়টি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই ঘটনার পর বেগমগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা করি। আদালত চলতি বছরের ২০ মে পর্যন্ত ওই পদত্যাগপত্রের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বিদ্যালয়ে যাই। আমি অফিসকক্ষে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসি। বেলা ১১টার দিকে সাবেক সভাপতি মুক্তার হোসেনের ছোট ভাই একরাম হোসেনসহ একদল লোক অফিসে ঢুকে আমার ওপর হামলা চালান। জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলেন এবং মারধর করে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন তারা।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুক্তার হোসেন বলেন, ‘ওই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের ৫৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষায় তার ওই অনিয়ম ধরা পড়েছে। ফলে তাকে পদত্যাগ করতে বলা হলে পদত্যাগ করেন। আজ তিনি সন্ত্রাসী নিয়ে বিদ্যালয়ে গেলে এলাকার লোকজন তাদের প্রতিরোধে এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। তবে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা কিংবা তার জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুর রহমান বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক মারধর ও জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলার কথা আমাকে জানিয়েছেন। যারা তাকে মারধর করেছেন, তারাই তাকে বিদ্যালয়ে ঢুকতে দেন না। ইতিপূর্বে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নিয়েছেন। কিন্তু সেটি গৃহীত হয়নি। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে না গিয়েও বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। তাকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি যেহেতু রাজনৈতিক, তাই রাজনৈতিকভাবে সমঝোতায় যেতে। তিনি সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ওই প্রধান শিক্ষক আদালতে মামলা করেছেন। আদালত কী রায় দেন, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’