গেল ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ধীর হয়ে পড়া অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রভাবে বাংলাদেশে এ বছর নতুন করে ৩০ লাখ মানুষের ‘অতি দরিদ্র’ হয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব ব্যাংক। এতে দেশের অতি দারিদ্র্যের হার ২০২৩ সালের ৭ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৫ সালে ৯ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ হার হতে পারে ৬ দশমিক ১ শতাংশ বলে আভাস দিয়েছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটি। বিশ্ব ব্যাংকের বুধবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট- এপ্রিল সংস্করণের প্রতিবেদনে এমন পূর্বাভাস তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৭ সালের আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমা অনুযায়ী যাদের দৈনিক আয় ২ দশমিক ১৫ ডলারের কম হলে তাদের অতি দরিদ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করে বিশ্ব ব্যাংক বলছে, ২০২৫ সালে শ্রমবাজারের অবস্থা দুর্বলই থাকবে এবং সব খাতেই প্রকৃত মজুরি কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসময় অর্থনৈতিক কার্যকলাপের ধীরগতির কারণে দুর্বল জনগোষ্ঠী তুলনামূলকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যার ফলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য আরও বেড়ে যাবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে জাতীয় দারিদ্র্যের হার ২২ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমা অনুযায়ী (২০১৭ সালের ক্রয়ক্ষমতা সমতা অনুযায়ী প্রতিদিন ২ দশমিক ১৫ মার্কিন ডলার) চরম দারিদ্র্যের হার ৯ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছাবে, যার ফলে অতিরিক্ত ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়ে যাবে।
এর আগে প্রকাশ হওয়া ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট: ট্যাক্সিং টাইমস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন-জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৩ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটি। এর আগে অক্টোবরে প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশ হওয়ার আভাস দিয়েছিল তারা।
কোভিড মহামারীর আগে ২০১০ সাল থেকে ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা বাংলাদেশে এতটা কম প্রবৃদ্ধি ২০২০ সালের পর থেকে হয়নি।