শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ১২ বৈশাখ ১৪৩২
শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫
একাধিকবার ধর্ষণের পর লজ্জায় স্কুলছাত্রীর আত্মহ'ত্যা
বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫, ৩:৫৩ PM
মোংলা শহরে কিশোরী (১৪) আত্মহননের ঘটনার ভিন্ন মোড় নিতে শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে পরিবারের সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রচার পেলেও এখন জানা যাচ্ছে, বখাটে যুবক অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এই কিশোরীকে সুন্দরবনের করমজল পর্যটন স্পষ্টে নিয়ে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে ধর্ষণ ও এর ভিডিও করে রাখে।

ওই ভিডিওর ভয় দেখিয়ে ব্লাকমেল করে হুমকি দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এতে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। লজ্জা ও বখাটেদের হাত থেকে রক্ষা পেতে এক পর্যায়ে আত্মহননে বাধ্য হয়।

ঘটনার প্রায় চার মাস পর নিহতের বাবা এক নারীসহ তিন জনকে অভিযুক্ত করে বাগেরহাট আদালতে গত ৭ এপ্রিল ধর্ষণ ও আত্মহননে প্ররোচনার দায়ে এজাহার দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে গত ২১ এপ্রিল মোংলা থানা পুলিশ এজাহারটিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধর্ষণসহ আত্মহত্যার প্ররোচিত সংক্রান্ত ধারায় মামলা রেকর্ড করেন।

মামলার প্রধান আসামি আসহাবুল ইয়ামিনকে (২৪) বিশেষ অভিযান চালিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধবী কলোনি এলাকা থেকে গত ২২ এপ্রিল গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার যুবকের বাবা সোহেল রানা মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি নৌযানে মাস্টার পদে কর্মরত রয়েছেন।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওই কিশোরী পড়ালেখার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলায় বেশ পারদর্শী ছিল। অত্যন্ত চটপটে এই কিশোরীর ক্রিকেট খেলার সুবাদে মোংলার বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত ছিল। বিভিন্ন জায়গায় খেলার সূত্র ধরে আসহাবুল ইয়ামিন ও তার কয়েক সহযোগীর সঙ্গে পরিচয় হয়।

এর কিছুদিন পর আসহাবুল ও তার সহযোগীরা তাকে ফুঁসলিয়ে ট্রলারে করে সুন্দরবনের করমজল পিকনিক স্পষ্টে বেড়াতে নিয়ে যায়। সেখানে নেশা জাতীয় কিছু খাইয়ে আসহাবুল ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে সে দৃশ্য ও নগ্ন ছবি-ভিডিও নিয়ে রাখে। এরপর ব্ল্যাকমেল করতে থাকে।

ভিডিও-ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এভাবে দিনকে দিন অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে গত ১৪ ডিসেম্বর গেলে তাকে এক সহযোগীর মোটরসাইকেলে করে আসহাবুল কাইনমারী এলাকায় একটি কফিশপে ডেকে নেয়। সেখানে কথাবার্তার এক পর্যায়ে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে আসহাবুল তিরস্কার, লজ্জাজনক ও অপমানমূলক নানা কথাবার্তা বলাসহ তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। এতে ঘরে ফিরে আত্মহত্যা করে।

এ ঘটনায় প্রথমে মোংলা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়। পরে নিহতের অভিভাবকরা বিভিন্ন মাধ্যমে এসব ঘটনা জানতে পেরে আসহাবুলসহ তার কয়েক সহযোগীর বিরুদ্ধে বাগেরহাট আদালতে গত ৭ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধর্ষণসহ আত্মহত্যার প্ররোচিত সংক্রান্ত ধারায় এজাহার দাখিল করেন।

মোংলা থানার ওসি (তদন্ত) মানিক চন্দ্র গাইন জানান, ইতিমধ্যে মামলার তদন্ত কাজ শুরু করা হয়েছে। ঘটনার অন্যতম হোতা আসহাবুল ইয়ামীনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত