এক দশক আগে বাংলাদেশে যাত্রা করে শেয়ার-নেট বাংলাদেশ। ‘জ্ঞান হবে অর্থবহ পরিবর্তনের চালিকাশক্তি’- এই লক্ষ্যে বিশেষ করে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার (এসআরএইচআর) বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার দশ বছর পর, সেই স্বপ্নের বীজ এক শক্তিশালী-প্রাণবন্ত নেটওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। যেখানে রয়েছে দুই হাজারের বেশি ব্যক্তি সদস্য এবং ১৫০টিরও বেশি প্রাতিষ্ঠানিক সদস্য। এই নেটওয়ার্ক দেশজুড়ে নীতি নির্ধারণে প্রভাব ফেলেছে। কথোপকথনকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে এবং সম্প্রদায়গুলোকে ক্ষমতায়ন করেছে।
নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় এটি অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে। তবে এটি কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং এটি ছিল একটি আত্ম-অনুসন্ধানের সাফল্যের স্মরণ।
অনুষ্ঠানে শেয়ার-নেট বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দেশের সমন্বয়কারী ডা. ফারহানা হক আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান সব অংশীদার, সদস্য ও সহযোদ্ধাদের প্রতি। যাদের নিরলস প্রচেষ্টা এবং যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি এই এক দশকের সাফল্যের ভিত্তি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশের নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মান্যবর থেইস ভাউডস্ট্রা, এসআরএইচআর বিষয়ে নেদারল্যান্ডস সরকারের অঙ্গীকার তুলে ধরেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, মানবাধিকার ও এসআরএইচআর-এর অবিচ্ছেদ্য সংযোগ কখনোই উপেক্ষা করা উচিত নয়।
গত এক দশকে শেয়ার-নেট বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে একটি জীবন্ত ইকোসিস্টেম, যেখানে গবেষণা, নীতি, চর্চা এবং বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা একে অপরের সাথে মিলে বাস্তবসম্মত সমাধান সৃষ্টি করছে। ‘শেয়ার-নেট বাংলাদেশের ১০ বছর’ বিষয়ক সেশনে জ্ঞান ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ জান্নাতুল মুনিয়া তার ব্যক্তিগত ও পেশাগত যাত্রার গল্প শেয়ার করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং অধিকারকর্মী ডা. হালিদা হানুম আখতার আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, এসআরএইচআর ছিল, আছে এবং থাকবে আমার জীবনের পথচলায়। এই কাজে নিবেদিত আরও অনেক মানুষের সাথে যুক্ত হয়ে আমি আবার আশ্বস্ত হই- আমরা একা নই। আমরা সবাই মিলে একটি আন্দোলন।
ইউএনএফপিএ-র ফোকাল পার্সন ডা. মোহাম্মদ মুনির হোসেন গুরুত্বের সাথে বলেন, ডিজিটাল বিভাজন কমানোর এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে আরো বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি, যেন এসআরএইচআর আলোচনায় কেউ পিছিয়ে না থাকে।
শেষে, শেয়ার-নেট বাংলাদেশের প্রকল্প পরিচালক অর্ণব চক্রবর্তী আবেগঘন আহ্বান জানিয়ে বলেন, শেয়ার-নেট বাংলাদেশ এখানেই থামবে না। আমাদের গত দশকের যাত্রায় আমরা গর্বিত, কিন্তু ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা আরও বেশি আশাবাদী।