দিনাজপুরে ঘোড়াঘাটে মাদক ব্যবসায়ীদের পাতানো ফাঁদে নিজেরাই ফেঁসে গিয়ে আঃ হালিম কশাই (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী আসামী। শেষ পর্যন্ত পুলিশের বিচক্ষণতায় রক্ষা পেল তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী। আর নিজেদের পাতানো ফাঁদে ফেঁসে গিয়ে আসামী হলেন মাদক ব্যবসী আঃ হালিম, স্বামী জাহাঙ্গীর আলম, আঃ করিম ও স্ত্রী সালমা বেগম দুই রাত একদিন অভিযান চালিয়ে রবিবার ভোরে পরিকল্পনা কারীর মূল হোতা উপজেলার দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামের বশির উদ্দিন বশুর পুত্র আঃ হালিমকে আটক করে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ।
স্ত্রীকে একতরফা তালাক দিয়ে মিমাংসা করার কথা বলে বাড়িতে ডেকে এনে ইয়াবা ট্যাবলেট ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন স্বামী ও তার মাদক কারবারিরা।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
আটক ব্যক্তি বুলাকীপুর ইউপির দক্ষিণ দেবীপুরের মৃত বছির উদ্দিন ওরফে বসু ছেলে মোঃ হালিম।
গত শুক্রবার উপজেলার ১নং বুলাকীপুর ইউপির ভেলাইন নামক গ্রামে এমন ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে, তদন্তে নামে পুলিশ এবং সত্য উদঘাটনে কাজ করতে শুর করেন।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, ৮ বছর পূর্বে উপজেলার বুলাকীপুর ভেলাইন গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের সাথে পরিচয় সূত্র ধরে হোসনে আবার বিয়ে হয়। অনুমান ৩ বছর সংসার করার পর জাহাঙ্গীর আলম হোসনে আরাকে একতরফা তালাক দেয়। পরে আবার কৌশলে জাহাঙ্গীর আলম হোসনে আরার সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং ঢাকায় কাজ করার সুবাদে হোসনে আরার কাছে মাস শেষে টাকা নিতে থাকে জাহাঙ্গীর। এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে আবার সম্পর্কের অবনতি হলে, জাহাঙ্গীরের দোসরা মিমাংসার কথা বলে পরিকল্পিত ভাবে হোসনে আরাকে ঢাকা থেকে ঘোড়াঘাট রাণীগঞ্জ বাজারে নিয়ে আসে। যার মূর্খ ভূমিকা পালন করেন হালিম নামের এক মাদক কারবারি। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঘটনার দিন বিকাল ৪টায় অন্যান্য দোসররা হোসনে আরাকে ফোন দিয়ে মিমাংসা আজই করে টাকা দিয়ে তাকে বিদায় করবে মর্মে বাড়িতে ডাকে। একপর্যায়ে ওই দিন শুক্রবার বিকাল ৫ টায় হোসনে আরা ও তার নানা রানীগঞ্জ বাজারে রাহমানিয়া হোটেলে তার স্বামীর দোসর হালিমের সাথে দেখা করে এবং ভ্যানে চড়ে ভেলাইন গ্রামে আর এক দোসর করিমের বাড়িতে মিমাংসায় বসে। সেখানে কৌশলে করিম এবং করিমের স্ত্রী মিলে হোসনে আরার ভ্যানিটিব্যাগে ইয়াবা ঢুকে দেওয়ার পর হালিম কে জানিয়ে দেয়। পরে হালিম থানা পুলিশ কে মুঠোফোনে জানায়, করিমের বাড়িতে এক মহিলা তার ব্যাগের মধ্যে ইয়াবা নিয়ে বিক্রির জন্য এসেছে। থানা পুলিশ খবর পেয়ে করিমের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করলে সেসময় অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। পরে ভূক্তভোগী নারীর ব্যাগ চেক করলে তার ব্যাগের মধ্যে ৪০ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট এর সন্ধান পায় থানা পুলিশ। পরে ভূক্তভোগী নারী হোসনে আরা এবং তার সঙ্গে আসা নানাকে থানায় নিয়ে আসা হয়।
সেসময় ওই নারীকে থানায় আনলে সার্বিক ঘটনা শুনার পর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু হাসান কবিরের সন্দেহ হয় এবং তিনি এসময় এসআই জিয়াউর রহমান, এসআই নূর-আলম কে সঙ্গে নিয়ে রাতভর তদন্ত করে জানতে পারেন যে, ওই নারীকে একটি সংঘবদ্ধ মাদক কারবারির দল চক্রান্ত করে ফাঁসানোর সকল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করেছিল যা পরে থানা পুলিশের বিচক্ষণতায় তাদের ষড়যন্ত্র শেষ পর্যন্ত টিকতে পারেনি।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির সত্যতা শিকার করে জানান, সব ঘটনা শুনার পর সন্দেহ হলে, অনুসন্ধানে নামে থানা পুলিশ। দুই রাত একদিন অনুসন্ধানের পর ভূক্তভোগী ওই নারীকে এক দল মাদক কারবারি ফাঁসানোর চেষ্টা করে মর্মে সত্যতা মিলে। পরে এই চক্রের মূল হোতাকে অনেক চেষ্টার পর আজ রবিবার ভোরে আটক করা হয়েছে এবং আরও কয়েক জন কে আসামি করে একটি মাদক মামলা করা হয়েছে। এসময় তিনি আরও বলেন, যদি তদন্ত না করে শুধু মাত্র তথ্যের ভিত্তিতে ওই নারীকে আসামি করা হত তবে এক নির্দোষ ব্যক্তি সারা জীবনের জন্য মাদক মামলার আসামি হত আর দুষ্কৃতী কারীরা লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে যেত।আটক আসামিকে আজ রবিবার বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
-বাবু/শোভা