অনন্য মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী হজরত আদম আলাইহিস সালাম। ফেরেশতারা তাকে সম্মানজনক সেজদা করেন। এরপর মহান আল্লাহ তাঁর প্রশান্তির জন্য সঙ্গী হিসেবে হজরত হাওয়া আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তাআলা তাদের উভয়কে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে জান্নাত দিয়ে ধন্য করেছেন। জান্নাতের সব জিনিসের উপর অধিকার দিয়েছেন।
হজরত হাওয়া আলাইহিস সালামকে সৃষ্টির পর মহান আল্লাহ তাআলা তাদের উভয়ের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেন-
وَ قُلۡنَا یٰۤاٰدَمُ اسۡکُنۡ اَنۡتَ وَ زَوۡجُکَ الۡجَنَّۃَ وَ کُلَا مِنۡهَا رَغَدًا حَیۡثُ شِئۡتُمَا ۪ وَ لَا تَقۡرَبَا هٰذِهِ الشَّجَرَۃَ فَتَکُوۡنَا مِنَ الظّٰلِمِیۡنَ
‘আর আমি বললাম, ‘হে আদম, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর এবং তা থেকে আহার কর স্বাচ্ছন্দ্যে, তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী এবং এই গাছটির নিকটবর্তী হয়ো না, তাহলে তোমরা যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৩৫)
প্রসঙ্গত হজরত আদম আলাইহিস সালামকে মাটি দ্বারা তৈরি করে আল্লাহ তা’আলা ফুৎকার দিয়ে জীবন দান করেন। কিন্তু হজরত হাওয়া আলাইহিস সালাম এভাবে সৃষ্টি হননি। তাহলে তাঁর সৃষ্টি কীভাবে হলো? ঐতিহাসিক বর্ণনা মতে ২টি তথ্য ওঠে এসেছে। তাহলো-
১. মুহাম্মদ বিন ইসহাক বলেন, আহলে কিতাবদের আলেমগণ থেকে হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনা অনুসারে বর্ণিত আছে যে, ইবলিসকে ধমক ও ভীতি প্রদর্শনের পর আদম আলাইহিস সালামের জ্ঞান প্রকাশ করতঃ তাঁর উপর তন্দ্রা চাপিয়ে দেন। এরপর তাঁর বাঁম পাঁজর থেকে হজরত হাওয়া আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করেন। চোখ খোলামাত্র তিনি তাঁকে দেখতে পান এবং রক্ত ও গোস্তের কারণে অন্তরে তার প্রতি প্রেম ও ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। এরপর আল্লাহ তাআলা উভয়কে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন এবং বেহেশতে বসবাস করার নির্দেশ দেন।
২. হজরত ইবনে আব্বাস ও হজরত ইবনে মাসউদসহ কতিপয় সাহাবি থেকে বর্ণিত আছে যে, ইবলিসকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়ার পর হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সেখানে জায়গা করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে সময় তিনি একা ছিলেন। সুতরাং তাঁর ঘুমের অবস্থায় হজরত হাওয়া আলাইহিস সালামকে তাঁর পাঁজর হতে সৃষ্টি করা হয়। জেগে ওঠে তাঁকে সামনে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করেন, তুমি কে? তুমি কেনইবা সৃষ্টি হলে? হজরত হাওয়া উত্তরে বলেন, ‘আমি একজন নারী, আপনার শান্তির কারণ রূপে আমাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য। যিনি মানুষের যথাযথ প্রয়োজনে রহমত, বরকত ও মাগফেরাত বর্ষণ করেন। আল্লাহর সান-মান ও মর্যাদার সামনে অবনত মস্তকে সেজদা দানের তাওফিক দান করুন। আমিন।
-বাবু/এস আর