দীর্ঘদিন ধরে যান্ত্রিক ত্রুটির মধ্য দিয়ে চলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন একাডেমিক ভবনের লিফট। বারবার প্রশাসনকে বলার পরও লিফট নিয়ে নেয়নি কোনো পদক্ষেপ। অবশেষে লিফট ছিঁড়ে পড়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে লিফট নিয়ে রয়েছে বিশাল দুর্নীতির অভিযোগ।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের শিক্ষার্থীরা ক্লাস শেষে লিফটে করে নিচে নামার সময় লিফটটি ছিঁড়ে পড়ে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। এ সময় শিক্ষার্থীদের ১৫ মিনিটের মতো লিফটে আটকে থাকতে হয়। পরবর্তীতে উদ্ধারকর্মীরা এসে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করেন।
লিফটে আটকে থাকা শিক্ষার্থীরা জানান, তারা ক্লাস শেষে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে লিফটে করে নামছিলেন। হঠাৎ লিফট ছিঁড়ে নিচে পড়ে যায়, তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তারা জানান এই সময়ে আমাদের একটা মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। মনে হয়েছে এই বুঝি দম বন্ধ হয়ে আসলো, এই বুঝি মারা গেলাম। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আমরা নিরাপদ নই যা খুবই হতাশাজনক। আমারা দ্রুত লিফট সমস্যা সমাধানের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমি ভবনের লিফট নিয়ে রয়েছে বিশাল দুর্নীতির অভিযোগ। সাতটি লিফট বসানোর কথা থাকলেও তা বসানো হয়নি। অভিযোগ আছে, পুরনো লিফটের জায়গায় নতুন আধুনিক মানের লিফট স্থাপনের কথা থাকলেও সেখানে নিন্ম মানের ‘ক্লেমান’ কোম্পানির লিফট ব্যবহার করা হয়েছে। ইউরোপীয় উচ্চমানের ফুজি লিফট, সাইব লিফট, সিন্ডেলার বা হিটাচি কোম্পানির ‘এ’ গ্রেডের লিফটের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বলা হলেও ব্যবহার করে হচ্ছে নিম্নমানের ক্লেমান লিফট যা ইউরোপের সবচেয়ে বাজে লিফট হিসেবে চিহ্নিত।
উল্লেখ্য, তিন সপ্তাহের অধিক সময় ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের চারটি লিফটের মধ্যে দুটি লিফট বন্ধ রয়েছে। বাকি দুটি লিফটের মধ্যে একটি লিফট শিক্ষকদের জন্য। আর থাকে একটি লিফট যা আট হাজার শিক্ষার্থীদের জন্য। ফলে লিফটির উপর ব্যাপক চাপ পরে। আগে থেকেই শিক্ষার্থীরা ধারণা করেছিল যেকোনো সময় দুর্ঘটনা হতে পারে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বার বার অবগত করার পরও তারা এ নিয়ে কোনো কর্ণপাত করেনি।
বাবু/জাহিদ