মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৯ বৈশাখ ১৪৩২
মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫
রাত পোহালেই নেত্রকোনা জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ
সোহেল খান দূর্জয়, নেত্রকোনা
প্রকাশ: রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২২, ৩:০৭ PM

আগামীকাল সোমবার (১৭ অক্টোবর) নেত্রকোনা জেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে অন্তত তিনটি করে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ভোটে কারচুপি কিংবা হট্টগোল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নেত্রকোনা জেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।

জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, শতভাগ নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, ভোট চলাকালীর কোনো কেন্দ্রে হট্টগোল ও বিশঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। ভোট কেন্দ্রে কোনো জবরদস্তি করা যাবে না। এসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর থাকার নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।

এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায় জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র প্রতি নিয়োজিত থাকবে সাত জনের ফোর্স। ভোটের আগে-পরে থাকছেন পর্যাপ্ত সংখ্যায় নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট।

এছাড়াও নিয়োজিত থাকছে কয়েক প্লাটুন বিজিবি, কোস্টা গার্ড, র‌্যাব-এর মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার আইন-শঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় পুলিশের অস্ত্রসহ মোট তিন জন, আনসারের অস্ত্রসহ দুজন ও অঙ্গীভূত আনসারের দুজন; মোট সাত জন নিয়োগ করা হবে। ভোটগ্রহণের দিন, তার আগে একদিন ও পরে একদিন; মোট তিন দিন ভোটকেন্দ্রে ও সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় তারা দায়িত্ব পালন করবেন।

এক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্রের গুরুত্ব অনুসারে জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে পুলিশ সুপার, ক্ষেত্রবিশেষ মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার প্রাপ্যতা সাপেক্ষে ফোর্সের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারবেন।

জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিটি উপজেলার জন্য পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে ১টি মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স এবং র‌্যাবের ১টি করে মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করতে হবে। তবে বাস্তব অবস্থা ও স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্সের সংখ্যা হ্রাস/বৃদ্ধি করা যাবে। ফোর্সের ন্যূনপক্ষে ১টি দল ভোটকেন্দ্রের আশে পাশের এলাকায় নিবিড় টহলদানের ব্যবস্থা করবে। যতদূর সম্ভব মহিলা ভোটকক্ষের জন্য নারী ও পুরুষ ভোটকক্ষের জন্য পুরুষ অঙ্গীভূত আনসার নিয়োগ করতে হবে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট:  জেলা পরিষদ-২০২২ উপলক্ষে মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর আওতাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধের জন্য ৬১টি জেলায় প্রতিটির জন্য এক জন করে মোট ৬১ (একষট্টি) জন ম্যাজিস্ট্রেটকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ প্রতিরোধ ও আচরণবিধি সংক্রান্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য নির্বাচনী এলাকায় ভোটগ্রহণের আগের দু’দিন ভোটগ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পরের দুদিন অর্থাৎ ১৫ অক্টোবর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৫ (পাঁচ) দিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব): সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ প্রবেশ/নির্বাচনের জন্য হুমকীস্বরূপ কোনো ব্যক্তি/বস্তুর যাতায়াত/চলাফেরা ইত্যাদি আইন অনুযায়ী রোধ করা; মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে; নির্বাচনী এলাকায় সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবে; বিশেষ পরিস্থিতিতে রিটার্নিং অফিসার সহায়তা কামনা করলে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় তাকে সহায়তা করবে; রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসারের চাহিদা ব্যতিরেকে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোট গণনাকক্ষে কোনো প্রকার দায়িত্ব নেবে না।

পুলিশ: ভোটদানের জন্য ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ও স্বাচ্ছন্দে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারে, সে জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী ভ্রাম্যমাণ ইউনিটসমূহ কর্তৃক নিবিড় টহল দানের ব্যবস্থা করা; নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব পুলিশ বাহিনীর। ভোট কেন্দ্রের অভ্যন্তরে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করাই হবে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রধান কাজ। এছাড়া নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব সরঞ্জাম ও দলিল দস্তাবেজ আনা নেওয়ার সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; নির্বাচন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; নির্বাচন কার্যালয়সমূহ, রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের নিরাপত্তা বিধান করা; স্থানীয় জননিরাপত্তা, ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের সুশৃংখল লাইন করানোসহ স্থানীয় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা; ভোটারদের জন্য আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করার দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, আগামীকাল সোমবার নেত্রকোনায় ১০ টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএমএ’র মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে জেলার ১০ উপজেলায় একটি করে ১০ টি কেন্দ্রে ভোট স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ইতিমধে তিনটি করে সিসি ক্যামেরা স্থাপণ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ এসব সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করবেন।

নেত্রকোনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার একজন চেয়ারম্যান ও ৯ জন সদস্য ও তিনজন সংরক্ষিত নারী সদস্যের বিপরীতে লড়ছেন ৫০ জন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, সদস্য পদে ৩৫ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে লড়ছেন ১৩ জন প্রার্থী।

চেয়ারম্যান প্রার্থী তিনজন হলেও লড়াই হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা অসিত সরকার সজল, ‘বিদ্রোহী’ সাহিদ খান জ্যাতি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রার্থী আসমা সুলতানা আশরাফের মধ্যে। আগামীকাল সোমবারের জেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দেবেন। নেত্রকোনায় মোট ভোটার সংখ্যা রয়েছেন ১২১৩ জন।

-বাবু/এ.এস

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত