ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, এখন সময় এসেছে নগরে ভবন নির্মাণ করতে গেলে অবশ্যই সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিতে হবে। সবুজ এলাকা ও উন্মুক্ত স্থান ধ্বংস করে কিছু করতে দেওয়া হবে না। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভাবতে হবে।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ, সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ, ইউএন-হ্যাবিট্যাট এবং ডিএনসিসির প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের সম্মিলিতভাবে আয়োজিত ‘নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসন ও নাগরিক সুবিধাসমূহ, প্রেক্ষিত ঢাকা’ শীর্ষক নগর কথা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, এয়ারপোর্ট সড়কে বনানী চেয়ারম্যান বাড়ির সামনে সিটি ফরেস্ট ছিল, সেটা ধ্বংস করে কেন সেতু ভবন করা হয়েছে। সেতু ভবনের পাশে আবার বিআরটিএ ভবন করা হয়েছে। কিছু দিন আগে আবারও গাছপালা কেটে ভবন নির্মাণ করতে গেলে আমি বন্ধ করে দিই। ড্যাপের মধ্যে এবং নগর পরিকল্পনায় এই জায়গাগুলোতে যদি সিটি ফরেস্ট থাকে তাহলে ভবন ভাঙতে হবে। নগরের প্রয়োজনে, জনগণের স্বার্থে যেকোনো ভবন ভাঙতে হবে।
সব বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, যেকোনো কাজ দেশের স্বার্থে ও দশের স্বার্থে হলে আমি আপনাদের সঙ্গে যোগ দেব। যদি নিজের স্বার্থে হয় তাহলে আমি আপনাদের সাথে নেই। সুন্দর নগরায়ন করতে গেলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। মিরপুর প্যারিস রোড সংলগ্ন মাঠটি প্লট আকারে কীভাবে বরাদ্দ দেওয়া হলো? ষাটের দশকে মাস্টার প্ল্যানে ও ১৯৮৭ সালের ন্যাশনাল হাউজিং অথরিটির লেআউটেও এটি উন্মুক্ত স্থান হিসেবে দেখানো আছে। ড্যাপের নকশায়ও এটি উন্মুক্ত স্থান হিসেবে রয়েছে। এখানে কিছুতেই প্লট হতে পারে না।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ঢাকার নদী বাঁচাতে হবে আর নদী বাঁচাতে হলে খাল খনন করতে হবে। ঢাকার খালকে বাঁচাতে হলে সিএস দাগের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। মহানগর জরিপ অনুসরণ করলে শহরকে বাঁচানো যাবে না। কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ড দখল হয়ে গেছে। এগুলো উদ্ধারে আমরা কাজ করছি। খাল উদ্ধারে সীমানা পিলার লাগানো শুরু করেছি। আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, দিন দিন তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। গাছ লাগাতে হবে। নগরবাসীকে ছাদ বাগান করতে উৎসাহিত করছি। ছাদ বাগান করলে ১০ শতাংশ ট্যাক্স রিবেট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এই ফাইলটি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করি দ্রুতই অনুমোদন হয়ে যাবে।
নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সিটি করপোরেশন কাজ করছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, হকারদের নগরের অংশ হিসেবে চিন্তা করে স্মার্ট ব্যবস্থাপনার আওতায় আনার জন্য মিরপুর দশ নম্বরে পাইলট প্রকল্প নিয়েছি। সপ্তাহে পাঁচ দিন নির্দিষ্ট হকাররা বিকাল ৪টার পর থেকে ফুটপাতে বসছে। অন্য সময় ফুটপাতে কোনো হকার বসতে পারবে না। পর্যায়ক্রমে পুরো এলাকায় এটি চালু করা হবে। হলিডে মার্কেট ও ইভিনিং মার্কেট করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম, সেন্টার অব আরবান স্টাডিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
বাবু/এসআর