মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৯ বৈশাখ ১৪৩২
মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫
আখাউড়ায় কালন্দী খাল দখলকারী ৩৪ জনের বিরুদ্ধে নোটিশ
আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০২২, ৪:৪০ PM
কালন্দী খাল দখলকারী ৩৪ জনের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ মামলার পর তাদের কে এবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অবৈধ ভাবে দখলে রাখা দখলকারীদের বিরুদ্ধে যেকোন দিন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হবে। এমনটিই আভাস দিলেন উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা।

খালটি উদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছেন প্রশাসন। মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে ৩৪ জন দখলকারীদের নামের তালিকা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ওইসব অবৈধ দখলকারীদের নিকট জেলা প্রশাসন থেকে নোটিশ দিয়েছেন দখল ছেড়ে দেয়া জন্য। এলাকায় মাইকিংও করা হয়েছে। তারপরও টনক নড়েনি অবৈধ দখলদাদের। অবৈধ দখলদার নিজেদের দখলে রেখে বসে আছেন ভূমি। কালন্দী খালটি আখাউড়া শহরের বুক চিরে তিতাস নদীতে পতিত হয়েছে। খালের পাড়ে আখাউড়ার শহর। এটির কারণে শহরটি সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পেয়ে ছিল এক সময়।

বর্তমানে শহরে পা রাখলে বুঝার উপয়ে নেই যে খালের পাড়ের শহর এটি। খালের কোন কোন স্থানে এর অস্তিত নেই। খাল দখল করে প্রভাবশালী ও ভূমি দুস্যরা দোকান পাট নির্মাণ করায় খাল খোঁজে পাওয়া যাবে না। খালের উপর অনেকেই আরসিসি পিলার দিয়ে দোকান ঘর ও বাড়ি নির্মাণ করেছে। উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালন্দী খালে কে কি পরিমাণ ভূমি দখল করে কি নির্মাণ করেছে তা মাপ জোগ করে ৩৪ জন অবৈধ দখলদারের একটি তালিকা তৈরি করে উপজেলা ভূমি অফিস। পরে ওই তালিকা জেলা প্রশাসকের বরাবরে পাঠানো হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। নিজেদের দখলে রাখা অবৈধ ভূমি ছেড়ে দেয়ার জন্য নোটিশ দেয় জেলা প্রশাসক। পরবর্তীতে মাইকিংও করা হয়েছে। তবুও কেউ দখল ছাড়ছে না। এখন যে কোন দিন উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে দখল মুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন ভূমি কর্মকর্তা।

উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে আরও জানা গেছে, খালটি রাধানগর, আখাউড়া মৌজার উপরে দিয়ে বয়ে গেছে তিতাস নদীতে। খালটি বি এস জরিপে খালটি সরকারের ১ নং খাস খতিয়ানে লিপিবদ্ধ হয়। খালিটি এস.এ ১৩৯ দাগ রূপান্তরিত হয়ে বি.এস ২৬৩ দাগের খাল হিসেবে সৃজন হয়। খালটি রাধানগর মৌজার বি.এস ম্যাপে পশ্চিম দিকে ৩৭ ফুট প্রস্থ ও পূর্ব দিকে ৩১ ফুট প্রস্থে উল্লেখ রয়েছে। মাঝখানে ২১ ফুট প্রস্থও রয়েছে। কিন্ত বাস্তবে উপজেলার সামনে থেকে ঢাকা হোটেলের পূর্ব দিক পর্যন্ত এর চিত্র ভিন্ন। এর মধ্যে কোন কোন দিকে ১০ থেকে ১৫ ফুট খাল খোঁজে পাওয়াও মুশকিল হবে। তবে থানা ব্রিজরে পর থেকে পশ্চিম দিকে বেশি দখল হয়েছে। অন্যদিকে বি এস জরিপের সময় খাল পাড়ের ভূমি বিভিন্ন ব্যক্তি নামেও রেকর্ড করা হয়েছে। আখাউড়ার কলেজপাড়ার বাসিন্দা মানজারুল হক মানিক বলেন, এই খালটি দখল হয়ে যাওয়ার কারণে শুধু জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি। পরিবেশ মারাত্বক ভাবে দূষিত হচ্ছে। এক দিকে ভারত থেকে আসা দূষিত পানি ও অপর দিকে আমাদের ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে জমাট ও দখল হওয়ায় খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। যার কারণে পানি আটকে থাকছে।

ফলে খালের পানি দূষিত হচ্ছে। এই দূষিত পানির কারণে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ শাপলু বলেন, আগে কালন্দী খাল দিয়ে বড় বড় নৌকা চলাচল করেছে। এখন খালটি দখল হয়ে যাওয়া এবং খনন না করার কারণে মরে গেছে। খালটি দিয়ে পানি চলাচল করতে না পারার কারণে একটু বৃষ্টি হলেই আখাউড়ার কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়। তাই খালটি দখল মুক্ত করে জরুরী ভিত্তিতে খনন করা প্রয়োজন। আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, কালন্দী খালটি দখল মুক্ত করা, এটা আখাউড়া বাসীর প্রাণের দাবি। খালটি দখলমুক্ত হলে আখাউড়া শহরটি অনেক সুন্দর হবে।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা জানান, উচ্ছেদ অভিযান প্রক্রিয়াধীন আছে। যেকোন দিন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হবে। অবৈধ দখলদারের কবল থেকে উদ্ধার করা হবে কালন্দী খালটি।

বাবু/জেএম
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত