কথাসাহিত্যের এক কালজয়ী উপাখ্যান হিসেবে ‘নীল ফড়িং’ উপন্যাসটি আত্মপ্রকাশ করেছে। নিভৃতচারী লেখক আব্দুল্লাহ শুভ্র তার ‘নীল ফড়িং’ উপন্যাসটিতে কথাসাহিত্যের নতুন এক ধারা সৃষ্টি করেছেন!
লেখকের নিজস্ব ঢং ও রচনাশৈলীতে লেখা এই উপন্যাসটি ইতিমধ্যে পাঠকদের হৃদয় জয় করেছে। বিভিন্ন চরিত্র এবং ঘটনার বুননই ‘নীল ফড়িং’ উপন্যাসটিকে অনন্য করে তুলেছে। লেখক তার দর্শনগুলোকে গতানুগতিক সমকালীন স্রোতের সাথে খাপ খাইয়ে বর্তমান সময়ের শূন্যতাকে যেন নতুন এক আদলে উপস্থাপন করেছেন।
ভালোবাসার অনবদ্য বেশ কয়েকটি সংজ্ঞা তিনি এই উপন্যাসটিতে নিজস্ব ঢঙে লিখেছেন যা ইতিমধ্যে পাঠকের হৃদয়ে গভীর ছায়া ফেলেছে। কথাসাহিত্যের মৌলিক বিষয়গুলো অনুধাবন করে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ভালোবাসা, বিজ্ঞান ও অতিপ্রাকৃতিক বিষয়গুলোর একটি বহুমাত্রিক প্লাটফর্ম তৈরি করেছেন যা যেকোনো পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
উপন্যাসের মূল চরিত্র সাবের এবং নাফিলার সাথে পারিপার্শ্বিক চরিত্রগুলো ‘নীল ফড়িং’ উপন্যাসটিকে অনবদ্য করে তুলেছে। নির্দ্বিধায় উপন্যাসটিকে বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী উপন্যাস হিসেবে বললে ভুল হবে না। আব্দুল্লাহ শুভ্র কবিতা ও কথাসাহিত্যের এক নিভৃতচারী সাধক। তিনি সৃষ্টিশীল কর্মে নিজেকে গভীরভাবে নিমগ্ন রেখেছেন। তিনি কবিতা ও কথাসাহিত্যের দুই ভুবনে ইতোমধ্যে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন তিনি। সাহিত্য সাধনার নেশাকে মননে ধারণ করে কাব্যে ও উপন্যাসে পারমাঙ্গতা দেখিয়েছেন তিনি। তার কবিতা ও কথাসাহিত্য পাঠকমহলে যথেষ্ট আলোড়ন তৈরি করেছে। বিশেষ করে তরুণ পাঠকমহলে তাঁর সৃষ্টিকর্ম ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
আব্দুল্লাহ শুভ্রর কাব্যিক চাষাবাদের প্রথম ফসল ‘ফাগুন রঙা শব্দ’, দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কালো জোছনায় লাল তারা’। দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থটি ২০১৯ সালে অন্বেষা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘চলে এসো এক কাপড়ে’ ২০২০ সালে অমর একুশে বইমেলায় তারুণ্যের হাতছানি দিয়ে নান্দনিক কম্পন সৃষ্টি করে। তার সবগুলো কাব্যগ্রন্থ পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করে নান্দনিক ভুবনে আবহমান কাল ধরে টিকে থাকবে। কাব্য ও কথাসাহিত্যের দ্বৈত নির্মাণশৈলীর পাকা গাথুনিতে নিজেকে পরিপূর্ণ করেছেন আব্দুল্লাহ শুভ্র। ‘শেষ ট্রেন’ নামক সৃষ্টির মধ্য দিয়ে উপন্যাসের লম্বা স্তরভিত্তিক বুননে নিজেকে জানান দিয়েছেন। উপন্যাসটি উপন্যাসপ্রেমীদের মননের ক্ষুধা নিবারণ করে পাঠকমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। পাঠকপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা উপন্যাসগুলোর মধ্যে উক্ত উপন্যাসটি নিজস্বতার প্রমাণ রেখেছে। নান্দনিক পণ্যে পাঠকের চাহিদা পূরণে আব্দুল্লাহ শুভ্র।
তার দ্বিতীয় কালজয়ী উপন্যাস ‘নীল ফড়িং’ বুনন শেষ করে পাঠকের হাতে তুলে দিয়েছেন। ‘নীল ফড়িং’ উপন্যাসটি ইতোমধ্যে পাঠকের প্রত্যাশা সম্পূর্ণভাবে পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। আব্দুল্লাহ শুভ্রকে আবারো পাঠকের মনস্তত্ত্বের নান্দনিক ক্ষুধা নিবারণে নতুন করে ভাবতে হবে। আব্দুল্লাহ শুভ্রর অন্তর্মুখী অবয়বে দেশপ্রেম, রোমাঞ্চ ও মানবিক ভালোবাসার সহজাত গুণাবলী বিরাজমান। ‘একটি দলছুট তারা বুকপকেটে ঘুমিয়ে আছে, জেনেছি এর নাম আমারই হৃদয়’ আব্দুল্লাহ শুভ্রর এমন ভাবনায় জটিল বাস্তবতায় তার সরলতা ও মানবিকতার বহিঃপ্রকাশ রয়েছে। জীবনবোধের নিজস্ব দর্শন ও অনুসন্ধিৎসু মননে নির্মিত পুরোপুরি এক সত্তা আব্দুল্লাহ শুভ্র। তার কবিতা ও কথাসাহিত্য সমকালীন সৃজনশীলতায় অবদান রেখে প্রজন্মের প্রত্যাশা পূরণ করবে।
লেখক : কবি ও সাংবাদিক
বাবু/জেএম