কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিক্ষোভ মিছিল, রাস্তায় দাঁড়িয়ে পাঁচ মিনিট নীরবতা পালন, প্রতিবাদী সমাবেশ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নেত্রকোনা ট্রাজেডি দিবস পালিত হবে (৮ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার।
২০০৫ সালের ৮ ডিসেম্বর নেত্রকোণার উদীচী কার্যালয়ে সংঘটিত জঙ্গী বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণে প্রতিবছর স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালন করে আসছে এ দিনটি।
সকাল ৯ টায় জেলা শহরের অজহর রোডে উদীচী কার্যালয়ের সামনে কালো পতাকা উত্তোলন ও কালোব্যাজ ধারণের মধ্য দিয়ে,নেত্রকোনা ট্রাজেডি দিবস উদযাপন কমিটি, আয়োজিত দিনব্যাপী কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে। এরপর সকাল সাড়ে ৯টায় স্মৃতিস্তম্ভে করা হবে পুষ্পস্তবক অর্পণ। সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু এমপি, নেত্রকোনা ট্রাজেডি দিবস উদ্যাপন কমিটি, জেলা আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, প্রত্যাশা সাহিত্য গোষ্ঠী, শতদল সাংস্কৃতিক একাডেমি, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম, স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতি, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ, নেত্রকোনা সাধারণ গ্রন্থাগার, হায়দার শেলী স্মৃতি সঙ্গীত বিদ্যানিকেতনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৪০ মিনিট থেকে ১০টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত (বোমা হামলার সময়টিতে) শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, তেরিবাজার, মোক্তারপাড়া সেতুসহ বিভিন্ন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে পালন করা হবে ‘স্তব্ধ নেত্রকোনা’ কর্মসূচী।
ওই দিন পাঁচ মিনিট সময় থমকে ছিল গোটা শহর। কোনো যানবাহন চলেনি। পথচারীরাও দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন। এরপর সকাল ১১টায় বের করা হবে সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল। শহীদ মিনারের সামনে থেকে বেরিয়ে মিছিলটি সারা শহর ঘুরে আবার একই স্থানে এসে শেষ হবে। বিকেলে শহীদ মিনারের মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে সমাবেশ এবং দেশাত্ববোধক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ২০০৫ সালের ৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে উদীচীর জেলা সংসদ কার্যালয়ে জেএমবির আত্মঘাতী জঙ্গীদের শক্তিশালী বোমা হামলায় কেঁপে ওঠে নেত্রকোণা। প্রাণ হারান উদীচীর দুই শিল্পী খাজা হায়দার হোসেন ও সুদীপ্তা পাল শেলীসহ আটজন। নিহত অন্য ছয়জন হলেন: মোটর গ্যারেজ শ্রমিক যাদব দাস, গৃহিণী রানী আক্তার, মাছ বিক্রেতা আফতাব উদ্দিন, রিক্সাচালক রইছ উদ্দিন, ভিক্ষুক জয়নাল আবেদীন ও আত্মঘাতী কিশোর কাফি। আহত হন আরও অন্তত ৯০ জন। ওই হামলার পর নিহত মোটর গ্যারেজ শ্রমিক যাদব দাসকে ‘হিন্দু জঙ্গী’ হিসেবে শনাক্ত করে ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের ষড়যন্ত্র করে তখনকার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। কিন্তু আপামর জনতার প্রতিবাদের মুখে সে ষড়যন্ত্র তখন ব্যর্থ হয়।
-বাবু/এ.এস