দেশে গণতন্ত্র ও মানুষের কথা বলার অধিকার নেই অভিযোগ তুলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘ বর্তমানে দেশে কোন গণতন্ত্র নেই এমন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীরা দেখতে চাননি।’ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে রাজধানীর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, আমান উল্লাহ আমান, ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আমিনুল হকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের বুদ্ধিজীবী ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছেন, দেশ সেভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিকভাবে দেশ পরিচালনা হওয়ার কথা, কিন্তু ৫১ বছরেও সেটা না হয়ে দেশে এখন অর্থনীতিতে ধনী-গরিবের বৈষম্য প্রকট হয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা এই বাংলাদেশ দেখতে চাননি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমরা ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে চাই, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবীরা চেয়েছিলেন বাংলাদেশে মানুষের ভোটের অধিকার থাকবে, কথা বলার অধিকার থাকবে, অর্থনৈতিকভাবে ভারসাম্য থাকবে, মানুষ খেয়ে-পরে শান্তিতে থাকতে পারবে। এসব কিছুই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য গায়ের জোরে গত ১৪ বছরে ধ্বংস করেছে। এদেশের সব মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে।’ খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীদের যে স্বপ্ন, মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা—গণতন্ত্রকে এদেশে পুনরুদ্ধার করতে হবে। মানুষের অধিকারকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। গণতন্ত্রকে মেরামত করতে হবে। সে কারণে আজ জনগণের মধ্যে একটাই দাবি, যারা (সরকার) গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করেছে তারা তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। সেজন্য জনগণ আজকে এই সরকারের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে চাচ্ছে।’
বিএনপির সাম্প্রতিক আলোচিত ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ স্লোগানের ব্যাখ্যা দিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বিএনপিতে যে সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা আছেন, তা আওয়ামী লীগে নেই। আমি নিজেও একজন মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন (বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা) জিয়াউর রহমান। আমরা টেক ব্যাক বাংলাদেশ বলতে বোঝাতে চাই, যে বাংলাদেশের জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে, দেশ স্বাধীন করেছে, সেই মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার বাংলাদেশে ফিরে যেতে চায় দেশবাসী। কারণ আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি নেই। ধনী-গরিব বৈষম্য প্রকট। বিদ্যুতে লোডশেডিং, লুটতরাজ হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি।’
‘গত ১০ বছরে যে পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে, সেটা নজিরবিহীন। এই বাংলাদেশ আমরা চাই না। মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবীরা যেই বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছেন, আমরা সেই বাংলাদেশে ফিরে যেতে চাই’, বলেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।
বাবু/জেএম