মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৯ বৈশাখ ১৪৩২
মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫
সমুদ্রে ডুবে ২০ রোহিঙ্গার মৃত্যু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২, ৪:৫৯ PM
উন্নত জীবনের আশায় সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে গত কয়েক সপ্তাহে নৌকা ডুবে অন্তত ২০ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। মিয়ানমারের সংখ্যালঘু শত শত রোহিঙ্গা মুসলিমকে বহনকারী কয়েকটি নৌকা ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছালেও অনেকে ভারত মহাসাগরে ভেসে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এই তথ্য জানিয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় দুর্যোগ সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাগরে কয়েক সপ্তাহ ভেসে থাকার পর সোমবার আচেহ প্রদেশে একটি নৌকা পৌঁছেছে। এই নৌকায় ১৭৪ জন রোহিঙ্গাকে পাওয়া গেছে; যাদের বেশিরভাগই পানিশূন্য, ক্লান্ত এবং জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন।

রোহিঙ্গাদের সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা আরাকান প্রজেক্টের ক্রিস লিওয়া বলেছেন, নৌকাটি কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ ছিল। এমনকি সেটি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কাও করা হয়েছিল। সোমবার ইউএনএইচসিআর বলেছে, গত প্রায় এক দশকের মধ্যে সমুদ্রে রোহিঙ্গাদের জন্য সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর হতে যাচ্ছে ২০২২ সাল। এই বছর বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে মরিয়া হয়ে পালানোর চেষ্টা করেছেন রোহিঙ্গারা।

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমরা দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতিত হয়ে আসছেন। বছরের পর বছর ধরে এই রোহিঙ্গাদের অনেকে থাইল্যান্ড, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পালিয়ে গেছেন। প্রত্যেক বছরের নভেম্বর থেকে এপ্রিলের মাঝে সমুদ্র যখন কিছুটা শান্ত থাকে, সেই সময় রোহিঙ্গারা প্রতিবেশি দেশগুলোতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রাণঘাতী অভিযান থেকে বাঁচতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। বর্তমানে বাংলাদেশের জনাকীর্ণ শরণার্থী শিবিরগুলোতে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। শরণার্থী শিবির ছেড়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে। গত বছর প্রায় ৫০০ রোহিঙ্গা শিবির ছেড়ে পালিয়ে গেলেও চলতি বছরে সেই সংখ্যা ২ হাজার ৪০০ জনে পৌঁছেছে।

রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবির ছেড়ে যাওয়ার কারণ পরিষ্কার নয়। তবে কিছু মানবাধিকার কর্মীর মতে, রোহিঙ্গাদের অন্যতম পছন্দের গন্তব্য দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে কোভিডের বিধিনিষেধ শিথিল শরণার্থী শিবির ছেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। সোমবার ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে পৌঁছানো রোহিঙ্গাদের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছেন দেশটির চিকিৎসকরা। সেখানে অনেক নারী, পুরুষ এবং শিশুদের সাথে আশ্রয় নিয়েছেন উমর ফারুখ নামের এক রোহিঙ্গা।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আমরা  বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির থেকে এখানে এসেছি। ইন্দোনেশিয়ার জনগণ আমাদের শিক্ষার সুযোগ দেবে বলে আমরা আশা করছি।’ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে নৌকায় চেপে সমুদ্র পাড়ি দেওয়া রোহিঙ্গাদের কয়েকটি দল পৌঁছেছে। তাদের মধ্যে রোববার ৫৭ রোহিঙ্গাকে বহনকারী একটি নৌকায় আচেহ পৌঁছায়। এর আগে, গত নভেম্বরে ২৩০ রোহিঙ্গাকে বহনকারী অন্য দু’টি নৌকা ইন্দোনেশিয়ায় যায়।

চলতি মাসের শুরুর দিকে শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী সাগর থেকে ১০৪ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে। অন্যদিকে, থাইল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ পানির ট্যাঙ্কে আঁকড়ে ধরে ভাসতে থাকা আরও ছয় রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে।

সূত্র: রয়টার্স

বাবু/এসআর
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত