বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদের অভিমত
খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে বাধা নেই, কিন্তু সুস্থ হিসেবে রাজনীতি করলেই জেলে যেতে হবে
বিশেষ প্রতিবেদক
প্রকাশ: রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৯:২৯ PM আপডেট: ২৬.০২.২০২৩ ১০:৩৮ PM
 সম্প্রতি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন কী, পারবেন না-এ নিয়ে একাধিক মন্ত্রী একেক ধরনের মন্তব্য করায় জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ আইনমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি তুলে ধরে সুষ্পষ্টভাবে বলেছেন, তার মুক্তির সময় যে দুটি শর্ত ছিল, সেখানে রাজনীতি করতে পারেব না, তা কোথাও লেখা নেই। শর্ত দুটি হচ্ছে, তিনি অসুস্থ, বাসায় র্থেকে চিকিৎসা নেবেন। সে জন্যই মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী আদেশে তাকে মুক্তি দিয়েছেন। আর তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
এবং যেহেতু তিনি দন্ডপ্রাপ্ত, তাই তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। এ প্রসঙ্গে বিএনপির নেতারা বলছেন, হঠাৎ করেই খালেদা জিয়ার রাজনীতির বিষয়টি সরকারের পক্ষ থেকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তোলা হচ্ছে। কারণ এতদিন সরকারের পক্ষ থেকে অনেকেই বলে আসছিলেন যে, অসুস্থতার জন্য মানবিক কারণে সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়া মুক্ত রয়েছেন। ফলে বিএনপি নেত্রী অন্য কোনো কর্মকাণ্ড চালাতে পারবেন না। কিন্তু এখন আইনমন্ত্রী ভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন বলে মনে করছেন বিএনপি নেতাদের অনেকে। এ ব্যাপারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং দেশের বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিনের উপদেষ্টা সম্পাদক অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বাংলাদেশ বুলেটিনকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, খালেদা জিয়া শারীরিক ভাবে অসুস্থ্য।
এ কারণেই মূলত তাঁর সাজা স্থগিত রেখে প্রধানমন্ত্রী সম্পূর্ন মানবিক কারণে তাকে মুক্তি দিয়েছেন। কিন্তু এখন তিনি যদি রাজনীতিতে সক্রিয় হন তাহলে প্রমাণিত হবে তিনি আর অসুস্থ্য নন, শারীরিক ভাবে সুস্থ্য। এখন কথা হল, তিনি শারীরিক ভাবে সুস্থ্য হলে তাকে আবার জেলে যেতে হবে। কারণ তাঁর শারীরিক অসুস্থ্যতার জন্যই মানবিক বিবেচনা থেকে তাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী ক্ষমতা বুলে মুক্তি দিয়েছেন। এখন সরকারের কথা অনুযায়ী তাঁর রাজনীতি করতে বাধা নেই, এটি যেমন সত্যি, আবার তিনি রাজনীতি করতে গেলে বিপদে পড়বেন এটাও তেমনি সত্যি। কারণ তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তিনি শারীরিক ভাবে অসুস্থ্য বলেই। এখন যদি তিনি আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হন তার মানে তিনি সুস্থ্য, অসুস্থ নন। আর সুস্থ্য হলে তাকে আবার সাজা ভোগ করতে জেলে বসেই।
খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার বিষয়ে সরকারের ওপর কোনো আন্তর্জাতিক কোনো চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, আমি মনে করি না এ ধরনের কোনো চাপ সরকারের ওপর আছে। এখানে সরকার দেখাতে চাচ্ছে যে, আমরা খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার ওপর কোনো বিধি নিষেধ আরোপ করি নাই। কিন্তু খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে গেলে তিনি আবার বিপদে পড়বেন। কারণ তিনি সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তাঁর তো সাজা মওকুফ করা হয়নি। তিনি মানবিক বিবেচনায় কারাগারের বাইরে আছেন। সুতরাং তিনি সুস্থ্য হলেই প্রমাণিত হবে যে, যে তিনি আর বাসায় থাকার উপযুক্ত নন। তাকে তখন কারাগারেই যেতে হবে।
খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার বিষয় নিয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এবং সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য করেছিলেন। সেই থেকেই খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার বিষয়টি নিয়ে সারা দেশেই আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
বাবু/এসআর
Also News Subject: খালেদা জিয়া
সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com. কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত
|