গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভয়ে নিজের নাম ঠিকানা বদলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) তৈরি করে ১৪ বছর পলাতক ছিল মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামী নুরুল ইসলাম (৩৩)। কিন্তু অবশেষে কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে থানা পুলিশের অভিযানে তাকে ময়মনসিংহের গলগন্ডা এলাকা থেকে গ্রেফতার হয়।
শুক্রবার (০৫ মে) দুপুরে কালীগঞ্জ থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের এসব তথ্য জানান কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উখিং মে।
গ্রেফতারকৃত নুরুল ইসলাম গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মনগাঁও গ্রামের বাচ্চু মোল্লার ছেলে। পরিবর্তন করা জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নাম দেন ফারুক মিয়া। সেখানে পিতার নাম রফিক মিয়া ও মাতার নাম নাছরিন এবং ঠিকানা হিসেবে শেরপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ নৌহাটা গ্রাম উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান (পিপিএম) জানান, ২০০৮ সালের কালীগঞ্জ থানার আলোচিত হত্যা মামলার (নং-০৮(০৮)০৮) চার্জশীটভূক্ত মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী নুরুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার (০৪ মে) দিবাগত ভোররাতে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার গলগন্ডা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ওসি জানান, নুরুল ইসলাম ২০০৮ সালে উপজেলার ব্রাহ্মনগাঁও গ্রামের ফজলু রহমানের ১৫ বছর বয়সী ছেলে মহিউদ্দিনকে একটি মোবাইল ফোনের জন্য ওই গ্রামের পাঁচজন মিলে হত্যা করে মরদেহ বিলের ধারে ফেলে দেয়। পরে চাঞ্চল্যকর মামলার পর থেকেই সকল আসামী পলাতক ছিল। বিচারে আসামীদের সকলকে মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষনা করা হয়। কিন্তু আসামী নুরুল ইসলাম বাঁচার জন্য নিজের নাম ঠিকানা বদলে এনআইডি তৈরি ১৪ বছর যাবৎ আত্মগোপনে ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে ওসি আরো জানান, কালীগঞ্জ থানা পুলিশ দীর্ঘদিন যাবৎ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে আসামীর অবস্থান এবং নাম ঠিকানা নিশ্চিত হয়ে গত বৃহস্পতিবার (০৪ মে) রাতে অভিযান পরিচালনা করে আসামীকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে মামলার বাদী, স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ এলাকাবাসী তাকে শনাক্ত করে আসামীর কালীগঞ্জের নাম ঠিকানা নিশ্চিত করে এবং জিজ্ঞাসাবাদে আসামী নিজেও স্বীকার করে যে তার নাম ঠিকানা পরিবর্তন করে শেরপুর জেলায় একটি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে। সে নরসিংদী সদর উপজেলায় বিয়ে করেন। বিয়ের কাগজপত্রে নাম ঠিকানা নুরুল ইসলামই আছে বলেও জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
-বাবু/এ.এস