মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৯ বৈশাখ ১৪৩২
মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫
তরুণদের ভাবনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন
জি. বি. এম রুবেল আহম্মেদ
প্রকাশ: বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩, ৩:০৯ PM

শতবছর পূর্বে গোপালগঞ্জের টঙ্গিপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান ও সায়েরা খাতুনের ঘরে জন্ম নেন খোকা নামের একটি শিশু। কালের পরিক্রমায় সেই খোকা হয়ে উঠেন একজন সফল মহামানব। আর তিনিই হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলা মায়ের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

হাজারো নিপীড়ন, নির্যাতন, জুলুম অত্যাচার পেরিয়ে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে তিনি স্বাধীনতার ডাক দেন। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে সাড়ে সাত কোটি বাঙালি স্বাধীনতা যুদ্ধে অনুপ্রাণিত হয়। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর দীর্ঘ নয় মাস অক্লান্ত পরিশ্রম, ত্যাগ ও সাধনায় প্রায় ত্রিশ লাখ তাজা প্রাণের বিনিময়ে আমরা একটি স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুু ও বাংলাদেশ এক-অভিন্ন। তাই বাঙালি জাতির মহানায়ক হয়ে উঠেন বঙ্গবন্ধু। বিশ্বের শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের প্রাণপুরুষ হিসেবে সবার হৃদয়ে জায়গা দখল করে নেন।

কিন্তু বড়ই নির্মম ইতিহাস! দেশের হাল ধরার মাত্র ৪ বছরের ব্যবধানে বাঙালীর জন্য একটি কালো অধ্যায় নেমে আসে। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বিশ্বের ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় রচিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সকল সদস্যদের একাত্তরের পরাজিত শক্তি এক কুচক্রীমহল নির্মমভাবে হত্যা করে। তৎকালীন কিছু সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নীলনকশার শিকার হোন বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার। যে সময় মোয়াজ্জিনের ফজরের আযান কানে প্রতিধ্বনিত্ব হচ্ছিল, ঠিক তখনই কালো মুখোশধারী বিপদগামী একদল ঘাতক বঙ্গবন্ধুর বুকে বৃষ্টির মতো অঝরে গুলি চালায়! রক্তক্ষরণ হয় বাংলাদেশের মানচিত্রে ও সাড়ে সাত কোটি বাঙালির হৃদয়ে। আমরা হারাই আমাদের অস্তিত্বকে, আমাদের রাষ্ট্রনায়ককে। নেমে আসে কালো ছায়া, কালো অধ্যায়, কলঙ্ক! পরিবারের সবাইকে হারিয়ে দেশের বাইরে থাকায় আল্লাহর অশেষ কৃপায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা। তাই আগস্ট আমাদের কলঙ্ক, এখনো আমাদের ভীতির অধ্যায় হয়ে আছে। এ মাসেই যত ষড়যন্ত্র বেড়ে যায়। তবুও শোককে শক্তিতে পরিণত কওে দেশে ফিরে দেশের হাল ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। বর্তমানেও শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বাবার অসমাপ্ত স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে অন্যায়, অবিচার, শোষণ, লাঞ্চনা-বঞ্চনা, সাম্প্রদায়িকতা ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। আর সেটিকে মনে প্রাণে ধারণ করা এই প্রজন্মের প্রত্যেকের কর্তব্য। তাই একজন তরুণ হিসেবে আমাদের মতো জাতির কাছে সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল ঘটনা হলো আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ আর বঙ্গবন্ধুই আমাদের একমাত্র সাহস ও অনুপ্রেরক। যতদিন পৃথিবীর বুকে এই বাংলাদেশ এবং বাঙালি থাকবে ততদিন থাকবে এই মুক্তিযুদ্ধের বীরত্ব ইতিহাস। এই ইতিহাস বুকে লালন করে দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে গড়ে তুলতে হবে। আজকের তরুণরা পাচ্ছে সত্যিকারের পরামর্শ। তাদের সামনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। বঙ্গবন্ধুর যে সংগ্রামমুখর জীবন, অসীম সাহসিকতা, অসাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলি, প্রজ্ঞা আর দূরদর্শিতা, মানুষকে ভালোবাসার ও প্রসারতা দেখিয়েছেন, তা থেকে দীক্ষা নিতে পাচ্ছে আজকের তরুণরা। তাদের সামনে এত বড় উদাহরণ বিশ্বে বিরল। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের আদর্শে। এই এগিয়ে চলার একমাত্র পাথেয় বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস থেকে। সেখানে প্রজ্জ্বলিত হচ্ছে তাঁর আদর্শ, স্বপ্ন ও সোনার মানুষ হওয়ার আহ্বান।

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আজ নতুন উদ্যমে তরুণদের চোখে ভাসছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে তাঁর আদর্শকে হত্যার চেষ্টা করা হলেও বর্তমানে বাংলাদেশ জেগে উঠেছে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের হাত ধরে। তাঁর আদর্শ বেঁচে আছে কোটি মানুষের হৃদয়ে। আর এ আদর্শ বুকে ধারণ করেই তরুণরা মেধা, মনন ও শ্রম দিয়ে দেশরত্ন শেখ হাসিনার সারথি হিসেবে কাজ করছে। তাদের উদ্ভাবনী শক্তিকে যথার্থ কাজে লাগিয়েই এ দেশ আরও একধাপ এগিয়ে যাবে- উন্নয়নের পথে। তবেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হবে। বাস্তবায়িত হবে তাঁরই কন্যা মাদার অফ হিউম্যানিটি, গণতন্ত্রের মানসকন্যা, ডিজিটাল বাংলাদেশের নির্মাতা, জননেত্রী শেখ হাসিনার  স্বপ্ন স্মার্ট দেশ। ইতোমধ্যে ডিজিটাল দেশে রুপান্তিত হয়েছে বাংলাদেশ। তারই ধারাবাহিকতায় একটি উন্নয়নশীল, ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত ও অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে অধিষ্ঠিত হয়েছে। পিছনে তাকানোর সময় শেষ, এখন সময় ঘুরে দাঁড়াবার। এখন সময় উন্নয়নের মহাসড়কে পাড়ি জমাবার। তারুণ্যের অগ্রযাত্রায় দেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের মহাসড়কে...দক্ষ তরুণ গড়ছে দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ, তারুণ্যের শক্তি, বাংলাদেশের সমৃদ্ধি।

লেখক : সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী

বাবু/এ.এস

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত