মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৯ বৈশাখ ১৪৩২
মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫
ইংরেজি মাধ্যমে বেশি টিউশন ফি’র কারণ
ড. মো. মাহমুদুল হাছান
প্রকাশ: বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩, ৩:১৪ PM

বাংলাদেশে মূলধারার শিক্ষা বলতে প্রধানত তিন ধারার শিক্ষাকে বুঝানো হয়ে থাকে বাংলা মাধ্যম শিক্ষাধারা, ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাধারা ও মাদ্রাসা শিক্ষাধারা। ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাধারায় আবার দুটি বিশেষ ধারা রয়েছে; একটি জাতীয় শিক্ষাক্রমের ইংরেজি ভার্সন শিক্ষাধারা এবং অন্যটি হলো আন্তর্জাতিক শিক্ষাক্রমের ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাধারা। অন্যদিকে, মাদ্রাসা শিক্ষাধারা আবার দুটি শিক্ষাক্রমে পরিচালিত হয়ে থাকে; সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নিয়ন্ত্রিত আলিয়া মাদ্রাসা এবং অন্যটি ব্যক্তিগত  ও সাধারণ জনগণের অর্থনৈতিক সহযোগিতায় পরিচালিত কওমি মাদ্রাসা, যেটি খারেজি মাদ্রাসা হিসেবেও পরিচিত। অতএব আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাধারার তিন দিকেই বিভাজ্য হয়ে থাকলেও ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাধারার প্রতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আগ্রহ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।

২০১৮ সালের একটি পরিসংখানে দেখা যায়, দেশের সকল ধারার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইংরেজি মাধমের শিক্ষার্থীদের হার ছিলো তখন মাত্র ৫ থেকে ৭ শতাংশ এবং বর্তমানে এর হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশে। সুতরাং ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা এখন বাংলাদেশের তিনটি মূল শিক্ষাধারার মধ্যে সর্বজনবিদিত একটি শিক্ষাধারা। ব্যানবেইসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশ শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অধীন শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতি প্রাপ্ত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিনশত। (সূত্র : বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অ্যাসোসিয়েশন) সেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন জানায়, দেশে প্রায় দুই হাজার ইংরেজি মাধ্যমের কিন্ডারগার্টেন স্কুল আছে, যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার লাখ।

ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাধারার দ্রুত উন্নয়ন দেখে কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিবর্গ অনেকটা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ শিক্ষাধারার বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে চলেছে। সম্প্রতি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার কিছু সংবাদ পরিবেশনে আমি খুবই বিস্মিত যে, উক্ত শ্রেণির  ব্যক্তিবর্গ ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা নিয়ে অনেক নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। অনেকে এ শিক্ষাধারাকে দেশীয় কালচারের পরিপন্থি বলে প্রপাগান্ডা করছেন, কেউ এটিকে জাতীয় শিক্ষার জন্য হুমকি মনে করে এর বিরোধিতা করছেন, আবার ইদানিং একশ্রেণি শিক্ষিত মহল ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাকে অভিজাতশ্রেণিদের বিলাসী শিক্ষাধারা বলে নানাভাবে বিষোদগার করে যাচ্ছেন। 

প্রশ্ন উঠেছে, ইংরেজি মাধ্যমে নাকি বাণিজ্যিক স্বার্থে পড়ালেখা করানো হয়, এখানে টাকাই নাকি শিক্ষার একমাত্র অবলম্বন। বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার বরাতে প্রেসব্রিফিংয়ে যে খবর ছাপা হয়েছে, সেখানে ইংলিশ মিডিয়াম প্যারেন্টস ফোরাম নামে একটি বেসরকারি সংস্থা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের টিউশন ফি নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন, যেটি আমার কাছে বেশ অতিরঞ্জিত ও অযৌক্তিক মনে হয়েছে।

একটু বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাই আমাদের দেশে মূলধারার যে শিক্ষা-কার্যক্রমগুলো রয়েছে তন্মধ্যে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাক্রমটি সবচেয়ে যুগোপযোগী,  উপযুক্ত ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানসম্পন্ন। সুতরাং এ শিক্ষাধারায় পড়ালেখার খরচ বেশি হবে সেটাই স্বাভাবিক। দেশে থেকে বিদেশি শিক্ষাক্রমে যথোপযুক্ত দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা অর্জন করার ইচ্ছা পূরণ করতে দেশীয় শিক্ষাধারার চেয়ে টিউশন ফি বেশি হওয়াটা মোটেও অযৌক্তিক নয়। উল্লেখ্য যে, দেশের অন্যান্য শিক্ষাধারায় মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে যে একেবারে কম খরচ হয়, তা কিন্তু নয়।

কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত এক তথ্যে জানা যায় যে, ক্যাডেট কলেজের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য সরকারের বছরে ৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ব্যয় হয়, যার পরিমাণ মাসে দাঁড়ায় ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা। হ্যাঁ, এ টাকার বরাদ্দ স্বয়ং সরকার দিলেও সেটি শিক্ষার্থীর পিছনেইতো খরচ হচ্ছে। এছাড়া এর বাইরেও অভিভাবকদের খরচ রয়েছে আরও অনেক। অথচ, আমাদের দেশের অধিকাংশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে মাসিক টিউশন ফি মাত্র ৬ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে, যদিও হাতে গোনা কয়েকটিতে একটু বেশি পরিমাণ অর্থ নিয়ে থাকেন, সেটি নেয়ার পিছনে অবশ্যই তাদের কোনো  যৌক্তিক কারণ রয়েছে। বাস্তবতার নিরীখে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষাবাবদ যে খরচ নেয়া হয়, তা মোটেও অযৌক্তিক নয়। নিম্নে এর কয়েকটি যুক্তি ব্যাখ্যা করা হলো-

এক. ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষা-কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানের, যেখানে বইয়ের মুদ্রণ মান, কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট,  শিক্ষাক্রমের মান এবং উন্নত শিখন-শিক্ষণ পদ্ধতি সমাদৃত। দুই. এখানে যোগ্যতা মূল্যায়ণ পরীক্ষা, ইনভিজিলেশন সিস্টেম, উত্তরপত্র নীরিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রিয় চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণ প্রক্রিয়া বিশেষভাবে গ্রহণ করা হয়ে থাকে, যা যথেষ্ট ব্যয়বহুল। তিন. ইংলিশ মিডিয়ামে শিক্ষকের মান নিয়ন্ত্রণ ও দক্ষতা উন্নয়নকল্পে যে প্রফেশনাল প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় তা যথেষ্ট ব্যয়বহুল। শিক্ষার মান উন্নত রাখতে শিক্ষকদের পিছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হয়ে থাকে, যা অন্য ধারার শিক্ষায় করা হয় না। চার. শিক্ষার্থীদের উন্নত পরিবেশ, আরামদায়ক ক্লাসরুম,  সিটিং চেয়ার-টেবিল, সার্বক্ষণিক শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্কুলাঙ্গন,  শিক্ষা সহায়ক সামগ্রী, বিজ্ঞানাগারের আপ-টু-ডেট যন্ত্রপাতি  এবং লেখাপড়ার অন্যান্য সরঞ্জামের সরবরাহ নিসন্দেহে দেশের অন্যান্য ধারার শিক্ষা-কার্যক্রম থেকে দামি ও ব্যয়সাপেক্ষ।

পাঁচ. ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলির লোকেশন, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, ভৌত কাঠামো,  দৃষ্টিনন্দন বিল্ডিং, স্বাস্থ্যকর পরিবেশের নিশ্চয়তা এবং উন্নত যোগাযোগ মাধ্যম বিবেচনায় রেখে যে সুযোগ-সুবিধা শিক্ষার্থীদেরকে প্রদান করা হয়, তাতে এ খরচ বহুগুনে বেড়ে যায়। ধরুন, যে প্রতিষ্ঠানগুলোর রাজধানীর অভিজাত এলাকাতে অবস্থিত সেখানকার ব্যয়ভার, আর অন্যান্য শহর বা বিভাগীয় পর্যায়ের কোন জায়গাতে অবস্থিত কোন প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ভার কোনোভাবেই সমান হতে পারে না। রাজধানীর অভিজাত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যয় অবশ্যই বেশি হতে হবে। ছয়. জাতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যগত বিভিন্ন অনুষ্ঠান উদযাপনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মান ঠিক রাখতে বিভিন্ন জাতীয় ও বিশ্বদিবসগুলোর প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, তা অন্য শিক্ষাধারা থেকে ব্যতিক্রম এবং সেগুলি অনেক ব্যয়বহুল।

সাত. ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে পাঠ্যক্রমের বাইরেও সহপাঠ্যক্রমিক শিক্ষাকার্যক্রম যেভাবে সম্পন্ন করা হয়, তা নিসন্দেহে ব্যয়সাপেক্ষে। এখানে ইনডোর ও আউটডোর কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ক্লাবভিত্তিক শিক্ষার্থীদেরকে বিভক্ত করে বহুমাত্রিক সৃষ্টিশীল কাজকর্মের যে আয়োজন করা হয় তার ব্যয় মেটাতে নিশ্চয়ই অনেক অর্থের প্রয়োজন হয়। এছাড়া, অধিকাংশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো তাদের বড় বড় অনুষ্ঠানগুলোতে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে ভাড়াকৃত কোন নামি-দামি হোটেলে উদযাপন করে থাকে। এছাড়া, তাদের ক্রিড়ানুষ্ঠানগুলোও শহরের বড় বড় মাঠ ভাড়া করে সম্পন্ন করতে হয়।

আট. ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্বমানে তৈরি করতে তাদের ইংরেজীতে কমিউনিকেশন স্কিল উন্নত করার পাশাপাশি তৃতীয় ভাষা হিসেবে একাধিক ভাষা শেখানো হয়ে থাকে, যেটি অন্য ধারার শিক্ষায় শেখার সুযোগ থাকে না। বহুভাষিক শিক্ষণে শিক্ষকদেরকে উচ্চ বেতনে নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে।

নয়. চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এ যুগে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করতে শিক্ষার্থীদেরকে এমনভাবে শিক্ষা দেয়া হয়, যেন তারা ইংলিশ মিডিয়াম থেকে লেখাপড়া শেষ করে বহির্বিশ্বে উচ্চ শিক্ষার জন্য নিজেদেরকে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে প্রস্তুত করতে পারে। শিক্ষার্থীদেরকে নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জন, উদ্যোক্তা তৈরির প্রশিক্ষণ, শারীরিক ফিটনেসসহ অন্যান্য চতুর্মাত্রিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা হয় এ ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষাধারায়।

দশ. ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল পরিচালনার সাথে যারা জড়িত প্রিন্সিপালসহ অন্যান্য শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন কাঠামো অন্যান্য শিক্ষাধারার ব্যক্তিবর্গের বেতন কাঠামো থেকে অনেক উন্নত। এখানে শিক্ষক শিক্ষার্থীর আনুপাতিক হার ১ : ১০, ফলে বেশি শিক্ষক নিয়োগদানের মাধ্যমে শিক্ষাকে অত্যাধুনিক মানে নিশ্চিত করা হয় এবং এর পিছনে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয়।

এগার. একবিংশ শতাব্দি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদেরকে যোগ্য প্রার্থী হিসাবে তৈরি করতে যে সকল দক্ষতার বিকাশ লাভ  প্রয়োজন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। এমনকি শিক্ষার্থীদেরকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিযোগিতয় টিকে রাখার যোগ্যতা উন্নয়নে শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন দেশে এক্সচেঞ্জ প্রগ্রামের মাধ্যমে কোলাবরেশন বৃদ্ধি করা হয়। ফলে বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য পরবর্তিতে তাদের আর কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না। এছাড়া, স্কুলজীবন থেকে তাদের মধ্যে যোগাযোগ দক্ষতা উন্নত হওয়ার কারণে তাদের  ক্যারিয়ার জগতে অনেক সাফল্য অর্জন করতে সহজ হয়। আর এভাবে তাদেরকে প্রস্তুত করতে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে প্রচুর বাজেট বরাদ্দ করতে হয়।

সর্বোপরি, আমাদের দেশের অধিকাংশ অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল অভিভাবকের ইচ্ছা থাকে তাদের সন্তান বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য গমন করুক। তাই তারা উন্নত শিক্ষাধারা হিসাবে ইংরেজি মাধ্যমকে বেছে নেয়। কারণ, এটি প্রমাণিত সত্য যে, বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে হলে যে সকল শিক্ষার্থী ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে ও লেভেল এবং এ লেভেলে উত্তীর্ণ হয়, তাদের জন্য বিদেশ যাত্রা অনেক সহজ হয়। অযথা ইংরেজি মাধ্যমে ধার্যকৃত টিউশন ও ভর্তি ফি নিয়ে বিতর্ক তোলেন, এটি তাদের অজ্ঞতা ও পক্ষপাতমূলক আচরণ বৈ কিছুই নয়। দেশের মূলধারার ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার ক্রমোন্নতি ও অগ্রগতি নিয়ে তাদের পরামর্শ ও সুচিন্তিত মতামত আমাদের জন্য অতীব সুফল বয়ে আনতে পারে।

লেখক : প্রিন্সিপাল ও প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ স্মার্ট এডুকেশন নেটওয়ার্ক (বিডিসেন)

বাবু/এ.এস

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত